নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা স্বাধীন জাতি। আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা সব সময় বিশ্বের দরবারের মাথা উঁচু করে চলব। কারো কাছে হাত পেতে নয়।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) গণভবনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদেরকে লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যেতে হবে। যুদ্ধবিদ্ধস্ত একটি দেশকে জাতির পিতা গড়ে তুলেছিলেন। সে সময়ে অনেক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এখানে তো কিছুই নেই! আপনি কীভাবে এ দেশকে আবার গড়বেন? বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার মাটি আছে ও মানুষ আছে। তাদেরকে নিয়েই আমি দেশ গড়ব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেন মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে, সেটাই আমরা সব সময় চাই। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা যতটুকু এগিয়ে যেতে পেরেছি, সেটুকু ধরে রেখেই আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্য যারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন, তাদেরকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি চাই, আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। স্ব স্ব কর্মস্থানে প্রত্যেকেই যার যার যোগ্যতা দিয়ে দেশ ও জাতির জন্য অবদান রেখে যাবে।
স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও
করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ থেকেই সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেননি প্রধানমন্ত্রী। জনসমাগম এড়াতে বরাবরই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন সরকারপ্রধান। আর এজন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বারবার আক্ষেপ করতে শোনা গেছে তাকে।
এক বছরেরও বেশি সময় পর তার এ আক্ষেপ ঘুচল। বৃহস্পতিবার গণভবনে নিজ হাতে স্বাধীনতা পুরস্কার মনোনীত ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিলেন সরকারপ্রধান। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়ে আসছে সরকার। এ বছর ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠান লাভ করে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক এই সম্মাননা।
এ বছরের পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে প্রয়াত আহসানউল্লাহ মাস্টার, প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবু, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম বজলুর রহমান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদ; সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহা; সংস্কৃতিতে চলচ্চিত্রকার-গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও নাট্যজন আতাউর রহমান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সমাজসেবা বা জনসেবায় সম্মাননা পান অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন। এ ছাড়াও গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলকে দেয়া হয়েছে স্বাধীনতা পদক।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এ অনুষ্ঠান। তাই সীমিত আকারে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণভবনেই করলাম। স্বাধীনতা পদক যদি নিজের হাতেই তুলে দিতে না পারি, তাহলে নিজের কাছেই কেমন লাগে। এবার অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য ঘটা করে হলো না, এজন্য দুঃখিত।’