সম-অধিকারের ভিত্তিতে দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশের জাতিগত বৈষম্যহীন সম্প্রীতি বিশ্বে বিরল। সকল ধর্ম-বর্ণ ও জাতি গোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ আজ সংখ্যালঘু মানুষদের বসবাসের জন্য উপযুক্ত স্থানে পরিণত হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সমধিকার নিয়ে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার, প্রশাসন, সুশীল সমাজ ও দেশপ্রেমিক জনগণের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আসছে কিছু রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও কুচক্রীরা। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে স্বাধীনতাবিরোধী চক্ররা এখনও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মাঠের রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে ক্ষমতার অবৈধ স্বাদ নিতে তারা বিভিন্ন সময়ে ধর্ম-বর্ণের নামে উসকানি দিয়েছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটের চেষ্টা করেছে অনেকবার। কিন্তু দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ শক্তির কাছে প্রতিবারই পরাজিত হয়েছে কুচক্রীরা। শত ষড়যন্ত্র ও প্রতিরোধ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলাদেশে যে আনন্দঘন পরিবেশ ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করে তা উল্লেখ করার মতো।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. নেহাল করিম বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এদেশে কোনো সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। এখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। এই দেশে সকল জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একসঙ্গে মিলে-মিশে সহাবস্থানে বসবাস করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমধিকার নিশ্চিত করেছে। বৈষম্যমূলক অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে তথ্য অধিকার আইন এবং গঠন করা হয়েছে তথ্য অধিকার কমিশন। সরকারি চাকরিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। বৌদ্ধ পূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, ইস্টার সানডেসহ অন্যান্য দিনগুলোতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এক কথায়, আবহমান কাল ধরে বাংলাদেশের প্রত্যেক ধর্মের মানুষ মুক্ত পরিবেশে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালন করে আসছেন। সুতরাং কেউ সেই সম্প্রীতিতে আঘাত করার চেষ্টা করলেও সফল হবে না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না।