নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেনে পণ্য পরিবহন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ জন্য বাংলাদেশে দুটি কন্টেইনার ডিপো, একটি লোডিং-আনলোডিং প্ল্যাটফর্ম ও ৯০০ মিটার রেললাইন স্থাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ। দুই দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে। গত ৪ মার্চ ভারতের নয়াদিল্লিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ক ঘোষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভারতের ষষ্ঠ ব্যবসায়িক অংশীদার। আর ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। ফলে রেলওয়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে উভয় দেশ একমত হয়েছে। এ জন্য ভারত বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে একটি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ডিপো স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বৈঠকে দুই দেশ এ বিষয়ে একমত হয়েছে। চূড়ান্ত করা হয়েছে প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি)। দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চালুর জন্য বেনাপোলে ৯০০ মিটার নতুন লাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়া দর্শনাতে একটি পূর্ণাঙ্গ লোডিং ও আনলোডিং প্ল্যাটফর্ম স্থাপন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ঈশ্বরদীতে সড়ক ও রেলকেন্দ্রিক একটি আইসিডি স্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পেরও ডিপিপি চূড়ান্ত হয়েছে। এ ছাড়া করোনার বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ থাকা বর্ডার হাট শিগগিরই চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা চালু করা হবে দ্রুত। এ ছাড়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্টের সম্ভাব্যতা যাচাই, মাল্টি মোডাল ট্রান্সপোর্টেশনের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানো এবং মান উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
এদিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আরোপিত অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি প্রত্যাহার, ভারতের নতুন কাস্টমস রুলসের প্রভাব, পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কিত সার্টিফিকেশনের পারস্পরিক স্বীকৃতি, এলডিসি উত্তরণপরবর্তী ভারতের বাজারে শুল্ক্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা অব্যাহত রাখা এবং শুল্ক্ক স্টেশন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও ভারতের বাণিজ্য সচিব বিভিআর সুব্রমানায়ম যার যার দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। এ বৈঠকের আগে ২ ও ৩ মার্চ দিল্লিতে দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ট্রেডের ১৪তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ট্রেনে পণ্য পরিবহনে দুই দেশই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ ভারত থেকে ট্রেনে সম্প্রতি পণ্য আমদানি বেড়েছে। কিন্তু পণ্য বাংলাদেশে খালাস করার পর কন্টেইনারগুলো ভারতে খালি ফেরত যায়। সেগুলোতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। তবে এ জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদন ছাড়াই যাতে খালি কন্টেইনারে ভারতে পণ্য রপ্তানি করা যায়, সে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।