নিউজ ডেস্ক:
ইউরোপের দেশ গ্রিস ১৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে তাদের দেশে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। তারা ৫ বছরের জন্য ভিসা পাবে। দেশটির জাতীয় সংসদ এই বিষয়ে দুইপক্ষের মধ্যে হওয়া সমঝোতা স্মারক গত বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে।
গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ শুক্রবার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘গ্রিসের পররাষ্ট্র সচিব আমাকে জানিয়েছেন যে, গ্রিসের জাতীয় সংসদ বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া বিষয়ক দুপক্ষের মধ্যে হওয়া সমঝোতা স্মারক গত বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে তারা এই খবরটি আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে। সেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে বলা থাকবে, যেমন বাংলাদেশি কর্মী যেতে কী কী কাগজপত্র লাগবে, কীভাবে ও কোন প্রক্রিয়ায় যাবে ইত্যাদি। তখন আমরা সবাইকে জানিয়ে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিসের সংসদ গত বৃহস্পতিবার দুপক্ষের মধ্যে সই হওয়া যে সমঝোতা স্মারক অনুমোদন করেছে সেটা বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকেও অনুমোদন করতে হবে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এটা অনুমোদন পাবে।’
গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের প্রবাসী কল্যাণ ভবনে বাংলাদেশ-গ্রিসের মধ্যে সই করা সমঝোতা স্মারকে মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং গ্রিসের পক্ষে দেশটির অভিবাসন সংক্রান্ত মন্ত্রী প্যানাইয়োটিস মিতারাচি স্বাক্ষর করেন। সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর গ্রিসের মন্ত্রী প্যানাইয়োটিস মিতারাচি ওই সময়ে জানান, সই হওয়া সমঝোতা স্মারক গ্রিসের জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পরই বাংলাদেশিরা কাজের উদ্দেশে দেশটিতে যেতে পারবেন।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর কমবেশি ৪০০০ নতুন কর্মীকে সেদেশে কাজ করার সুযোগ দেবে গ্রিস। প্রধানত কৃষি, নির্মাণ ও পর্যটন খাতে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। গ্রিসের কৃষি, পর্যটন এবং তৈরি পোশাক শিল্প খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সই করা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, বাংলাদেশি একজন কর্মী পাঁচ বছরের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে গ্রিসে কাজ করার ভিসা পাবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির সময় বাংলাদেশি শ্রমবাজারের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রফতানিতে ধস নামলে তা ঠেকাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ত্বরিতগতিতে উদ্যোগ নেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি কথা বলে করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত না পাঠানোর অনুরোধ করেন এবং শ্রমিকদের মানবিক দিক বিবেচনার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশিদের জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে দেশি কূটনীতিকদের নির্দেশ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেওয়া এই উদ্যোগে কাজ হয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় গ্রিসে বাংলাদেশি কর্মী পাঠাতে অনুমতি মিলেছে। পাইপলাইনে মাল্টা, জার্মানি, আলবেনিয়াসহ একাধিক ইউরোপের দেশ রয়েছে।