নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে ‘চরমপন্থী চিন্তাধারার’ কনটেন্ট শনাক্ত ও প্রচার মোকাবিলায় বাংলাদেশি ‘বিশেষজ্ঞদের’নিয়োগ দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক।
সোমবার দুপুরে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা আয়োজিত ‘ফাইটিং টেররিজম অ্যান্ড অর্গানাইজড হেট অ্যান্ড মেটাস অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় মেটার নীতিমালা এবং কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন করা বিষয়বস্তুর (কনটেন্ট) বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরা হয়।
ওয়েবিনারে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মেটার কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ডেঞ্জারাস অর্গানাইজেশন বিভাগের প্রধান নওয়াব ওসমান জানান, বাংলাদেশে ফেসবুকের মাধ্যমে চরমপন্থী চিন্তাধারার প্রচার মোকাবেলায় বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি এবং বাজার বোঝেন – এমন বাংলাদেশি ‘বিশেষজ্ঞদের’নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রশংসা করে দেওয়া পোস্ট সরিয়ে ফেলা হয়। রাজনৈতিক পোস্টের জন্যও এখন ফেসবুকের নীতিমালা রয়েছে। সন্ত্রাসী কনটেন্টের ধরন বদলে গেছে। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া উন্নত করেছি। এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ফেসবুকে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে তিনটি কর্মসূচি রয়েছে। এগুলো হলো সার্চ রিডাইরেক্ট, কারেজ প্রজেক্ট ও রিজিলেন্সি ইনিশিয়েটিভ।’
নওয়াব ওসমান বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করার জন্য মেটার একাধিক দল কাজ করছে। এসব কর্মী স্থানীয় বাজার ও ভাষা বিশেষজ্ঞ। তারা সবাই বাংলাদেশি। এ ছাড়া আমাদের প্রযুক্তি আছে। আমাদের অ্যালগরিদম অনেক পোস্ট ধরতে পারে। বিতর্কিত পোস্ট বিষয়ে ব্যবহারকারীরাও রিপোর্ট করতে পারেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যবহারকারীর রিপোর্ট বিবেচনা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ফেসবুক ব্যবহার করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মেটার গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গ নওয়াব ওসমান বলেন, এ ক্ষেত্রে ফেসবুকের প্রোগ্রামকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ চলছে; বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে। এ জন্য বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরাও কাজ করছেন। আরও নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।’ তবে, এ ক্ষেত্রে মেটার আরও তৎপর হওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ব্যবহারকারীদের মধ্যে সহনশীলতা বাড়াতে মেটা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং সুশীল সমাজও এর অন্তর্ভূক্ত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ওসমান। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ঘৃণা প্রচারের সুযোগ করে দিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন উঠেছে।
এ পরিস্থিতিতে ফেসবুক তথা মেটার ভূমিকা নিয়ে নাওয়াব ওসমান বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা দেখা যাচ্ছে তা এখানকার (বাংলাদেশের) অফলাইন বাস্তবতার প্রতিফলন।’
বাজার বিশ্লেষক সংস্থা স্ট্যাটিস্টার হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে চার কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে ফেইসবুকের।