বাংলাদেশের জন্য চীন অনেক কিছু করতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। গতকাল রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে চীনের আরো বিনিয়োগ ও প্রকল্প নিয়ে কাজ করার এখনই মোক্ষম সময় চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত ৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। গতকাল তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আমার মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে পারব। চীন অনেক কিছু করতে পারে। আমরা একে অন্যকে সমর্থন দিতে পারি। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরো ভালো ভবিষ্যতের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উচ্চ পর্যায়ের সফর নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপার সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
কভিড-১৯ ও ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় চীনের কিছু করার আছে। অপেক্ষাকৃত ভালো ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশের জন্য চীন অনেক কিছু করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে বাংলাদেশ এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ দিকে যাচ্ছে। তিনি এ ক্ষেত্রে চীনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনেরও অভিন্ন লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে প্রত্যাবাসন। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশের ত্যাগের কথা তিনি উল্লেখ করেন এবং প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ওয়েন বলেন, ‘আমরা এ ইস্যুতে আলোচনা করেছি। আপনারা (বাংলাদেশ) অনেক মূল্য দিচ্ছেন। আপনাদের ত্যাগ অনেক। আমাদের উদ্দেশ্য অভিন্ন (প্রত্যাবাসন)।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণে আলোচনা চলছে বলেও জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।
এদিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকার জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চীনকে ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আশা করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসনের একটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।