শনিবার , অক্টোবর ৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / বাংলাদেশের কলঙ্কজনক অধ্যায় জিয়াউর রহমান: গণতন্ত্রের হন্তারক ও স্বৈরাচারী ব্যবস্থার জনক

বাংলাদেশের কলঙ্কজনক অধ্যায় জিয়াউর রহমান: গণতন্ত্রের হন্তারক ও স্বৈরাচারী ব্যবস্থার জনক

নিউজ ডেস্ক:
৩ জুন, ১৯৭৮ সাল। বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়। সেনাপ্রধানের পদে থেকে নাটকীয় এক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন জিয়াউর রহমান। রাজনৈতিক দলগুলোকে কোণঠাসা করে নিজেই গঠন ‘জাগদল’ নামের একটি দল। এরপর তথাকথিত সেই নির্বাচন শেষে নিজেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। জিয়াউর রহমানের সামরিক উর্দি ও অস্ত্রের ভয়ে দেশের গণমাধ্যম অনিয়মের বিষয়ে চুপ থাকলেও, বিদেশি গণমাধ্যমে তা ফলাও করে প্রচারিত হয়। এই নির্বাচনে জিয়া কোনো কোনো এলাকায় ১১০ ভাগ ভোট পেয়েছেন বলেও প্রমাণসহ বিভিন্ন বিদেশি সংবাদপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

জেনারেল জিয়ার রাজনৈতিক দল বিএনপি সম্পর্কে পাকিস্তানের দি হেরাল্ড পত্রিকায় বলা হয়, ‘বিএনপির জন্ম ছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার নীলনকশার ফলশ্রুতি।… এই দলের জন্য যে দর্শন নির্ধারণ করা হয় তা হলো: আওয়ামী লীগের দুর্বল স্থানে আঘাত করা এবং জনগণের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব জাগ্রত করা।… নিন্দিত আওয়ামী লীগার, চরম বামপন্থী ও মুসলিম লীগারদের নিয়ে দলের জনবল বাড়ানো হয়।

এর আগে, ১৯৭৭ সালে এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে ক্ষমতাচ্যুত করে, অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান। এরপর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে একটি হ্যাঁ-না ভোটের আয়োজন করেন তিনি। লোক দেখানো সেই ভোটের আগে, বিক্ষোভের ভয়ে, রাস্তায় কোনো মানুষকে পর্যন্ত বের হতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কোনো প্রচারণাও করা হয়নি। ভোটের দুদিন আগে সড়কের পাশের দেয়ালে, চলমান রিকশা-বাস ও মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে জোড় করে জেনারেল জিয়ার সামরিক পোশাক পরিহিত পোস্টার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। এক ধরনের আতঙ্ক ছড়ানো হয় মানুষের মধ্যে।

ভোটের দিন ভয়ে কেউ বের হওয়ার সাহস পায়নি। ফলে ভোটারবিহীন থেকে যায় ভোটকেন্দ্রগুলো। এক পর্যায়ে মানুষ খুঁজে না পেয়ে, শেষ পর্যন্ত স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীকে ভোট দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিন শেষে ঘোষণা আসে, ৯৯.৪ ভাগ ভোট পেয়ে একচেটিয়াভাবে জয় লাভ করেছেন জেনারেল জিয়া।

স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান প্রথমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এরপর নিজের ক্ষমতা সুসংহত করতে ধ্বংস করে দিয়েছেন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। হ্যাঁ-না ভোট নামের একটি তামাশার প্রচলন ঘটিয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে, ভোটারবিহীন ভোটের প্রবর্তকও তিনি। জিয়াউর রহমানের অবৈধ ক্ষমতার মোহের কারণেই স্বৈরাচারী ব্যবস্থাপনায় পতিত হয় বাংলাদেশ। ফলে উগ্রবাদের বিস্তার ঘটে।

ভোটারবিহীন নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের শতভাগ ভোটের বিজয় এবং স্বৈরাচারী শাসন চালুর ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রুদ্ধ করে দেওয়ার জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতি প্রচলনের জন্য, জাতির কাছে জিয়াউর রহমান মীরজাফরের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি, খালেদা জিয়াও জনগণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এক ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন করেন। কোনো দল ওই সাজানো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায়, নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কুমিল্লা-৬ আসন থেকে জিতিয়ে আনেন বঙ্গবন্ধুর খুনি ও ফ্রিডম পার্টির আবদুর রশিদকে।

আরও দেখুন

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বড়াইগ্রামে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত 

  নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরের বড়াইগ্রামে …