নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের ইতিহাসে সুপ্রিম কোর্টে আদিবাসী সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে উঠে আসা প্রথম আইনজীবী হয়েছেন প্রভাত টুডু। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্রাকটিসের অনুমতি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২০২৩ সালে প্রভাত টুডু হয়ে ওঠেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রকাশিত তালিকায় তার নাম উঠে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়ায় অত্যন্ত আবেগ আপ্লূত তিনি। সেই সাথে সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়েছেন তিনি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জলাহার গ্রামে ১৯৮৫ সালে শ্যাম টুডু ও রাজোবালা মুরমু’র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন প্রভাত টুডু। সাত ভাই-বোনের মধ্যে প্রভাত টুডু সবার ছোট।
প্রভাত টুডু জানান, ২০০০ সালে মেট্রিক পাশ করার পর মারাত্মক রোড এক্সিডেন্টে তার ডান হাত ভেঙে যায় এবং মাথায় প্রচন্ড আঘাতে পড়াশুনা বন্ধ রাখতে হয়। পরবর্তীতে সমাজকর্মে মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। কিন্তু এরইমধ্যে তার মনে আইনজীবী হওয়ার প্রবল বাসনা জাগে।
আইনজীবী প্রভাত টুডু জানান, আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি ২০১২ সালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে এলএলবি পাশ করার পর ২০১৪ সালে এল.এল.এম সম্পন্ন করেন।২০১৭ সালে আয়কর আইনজীবী হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনআরবি) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আয়কর আইজীবী হিসেবে ঢাকা ট্যাক্সেস বারে সদস্য হন তিনি। এদিকে বার কাউন্সিলে পরীক্ষা জটের কারনে ২০১৮ সালে আইনজীবী হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন।
এরপর নিম্ন আদালতে ওকালতি করতে করতে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নার তত্ত্বাবধানে জুনিয়রসীপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রাকটিস শুরু করেন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্রাকটিসের অনুমতি পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সুপ্রিম কোর্টে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মধ্য হতে প্রথম আইনজীবী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি।
তিনি জানান, তিনি নিপীড়িত, নির্যাতিত, অধিকার বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করতে চান। যারা গরীব অর্থের অভাবে আদালতে যেতে পারছেন না তাদের জন্য কাজ করতে চান। ওকালতির পাশাপাশি সমাজিক বিভিন্ন কাজে তিনি জড়িত রয়েছেন। তিনি তাঁর সকল শুভান্যুধায়ী ও পরিচিতজনদের কাছে দোয়া ও প্রার্থনা কামনা করেছেন।