নিজস্ব প্রতিবেদক:
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষত দ্রুত কাটিয়ে উঠতে আসেমভুক্ত দেশগুলো ‘নিজে বাঁচো, অন্যকে বাঁচাও’ নীতি গ্রহণ করেছে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সেতুবন্ধনকারী সংস্থা এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম)।
সংস্থাটির ১৪তম ফাইন্যান্স মিনিস্টার্স সম্মেলন শেষে শুক্রবার তিনি এ কথা জানান। ভার্চুয়াল এ সভার আয়োজক বাংলাদেশ। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এতে সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নিজেদের আর্থ-সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে কিভাবে এই ভাইরাসকে দ্রুত মোকাবেলা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক দেশের চেয়েই ভালো। অনেক দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। কোভিড নিয়ন্ত্রণে যত দেরি হবে, ক্ষয়ক্ষতি ততই বাড়বে। যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করবে সব দেশ।
আসেম সভাপতি বলেন, ‘আগে সবাই শুধু নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করত। এবার দেখলাম, সবার উদ্দেশ্য এক, তা হল- নিজে বাঁচো, অন্যকে বাঁচাও। কোভিড শিখিয়ে দিয়েছে যে, নিজেকে বাঁচাতে হলে অন্যকেও বাঁচাতে হবে। এটিই ছিল সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু’- যোগ করেন তিনি।
করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ কী ধরনের উদ্যোগ নেবে- এমন প্রশ্নে কামাল বলেন, আমাদের পলিসি খুবই ফ্লেক্সিবল। যখন যা দরকার, তখন তাই করব। বিশ্বের কোথাও ভ্যাকসিন এলে তা বাংলাদেশেও আসবে। জনসংখ্যা অনুযায়ী ভ্যাকসিন আনব আমরা। ভ্যাকসিন বিতরণে কোনো অসমতা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভ্যাকসিনের মূল্য ধনী দেশগুলোর বহন করা উচিত।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্মেলনে কোভিড পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও বৈশ্বিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে শক্তিশালী বহুপাক্ষিক সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। কোভিডে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোতে কর্মসংস্থান, আয়, ব্যবসা-বিনিয়োগসহ সব পর্যায়ে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীরা।
সম্মেলনে এশীয়-ইউরোপ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা, কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং কোভিড মোকাবেলাসহ শক্তিশালী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করে সদস্য দেশগুলো।
সম্মেলনে এশিয়া-ইউরোপের ৪৩টি দেশের অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আসিয়ান সচিবালয় ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক অংশ নেয়। ২০২১ সালে আসেমের পরবর্তী অর্থমন্ত্রী সম্মেলন নমপেনে অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৯৬ সালে গঠিত আসেমে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে ২০১২ সালে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগের আবাসস্থল আসেমভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতির আকার গ্লোবাল ইকোনমির ৬০ ভাগ। বিশ্ব বাণিজ্যের ৫৫ শতাংশ ও ট্যুরিজমের ৭৫ শতাংশ হিস্যা আসেম দেশগুলোর।