শুক্রবার , জুলাই ৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / বহুল কাঙ্ক্ষিত খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হচ্ছে আজ

বহুল কাঙ্ক্ষিত খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হচ্ছে আজ

নিউজ ডেস্ক :

  • বেলা ১১টায় চালু হচ্ছে যাত্রীবাহী ট্রেন
  • সোয়া চার হাজার কোটি টাকা প্রকল্পে বরাদ্দ একটি কমিউটার

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি আরো সুগম করতে উদ্বোধনের সাত মাস পর খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হচ্ছে আজ শনিবার। বহুল কাঙ্ক্ষিত ৯১ কিলোমিটার রেলপথে সকাল ১১টায় যাত্রীবাহী ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ট্রেন খুলনার ফুলতলা হয়ে মোংলার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। এই ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করেন।

এর আগে ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালু করা হচ্ছে। এ বিষয়ে খুলনা থেকে মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘এ রেলপথে ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ট্রেন দিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে। ১ জুন সকাল ১১টা থেকে সোয়া ১১টার মধ্যে ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ ফুলতলা দিয়ে মোংলার উদ্দেশে যাত্রা করবে। এর মধ্য দিয়ে এ রেলপথে ট্রেন চলাচল উন্মুক্ত হবে।’

জানা গেছে, খুলনা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত চলাচল করে ‘বেতনা এক্সপ্রেস’ নামে একটি লোকাল ট্রেন। সেই ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ফেরার পথে খুলনার ফুলতলা জংশন থেকে মোংলার দিকে যাত্রা করবে। তখন ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ট্রেনটি ‘মোংলা কমিউটার’ নাম ধারণ করে চলবে। নতুন এই রেলপথে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটি ট্রেনই আপাতত চলাচল করবে। ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে মঙ্গলবার।

এদিকে খুলনা থেকে ভোর সোয়া ৬টায় ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়। এরপর বেনাপোল থেকে ছেড়ে ফুলতলা হয়ে মোংলা পৌঁছাবে বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে। ফুলতলা থেকে যাওয়ার পথে ‘মোংলা কমিউটার’ মোহাম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাঠি বাজার রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে। মোংলা থেকে বেলা ১টায় ট্রেনটি ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সাড়ে ৪টায়।

খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। একই সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেকের অনুমোদনের পর ২০১৬ সালে এই প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এরই মধ্যে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া রূপসা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে ৫.১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু। শেষ হয়েছে ১০৭টি ছোট ব্রিজ ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ। নির্মিত হয়েছে ১১টি স্টেশন। এই রেলপথের আট স্টেশন হলো— ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, দিগরাজ, কাটাখালী, চুলকাঠি, বাঘা ও মোংলা।

এ ব্যাপারে রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম জানিয়েছেন, এটা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মোংলা বন্দরকে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করা। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ ও উদ্বোধন করা না গেলেও এবার এই পথটি আমরা ১ জুন থেকে যাত্রী চলাচলের জন্য ওপেন করে দেব।

রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী জানান, নতুন এই রুটে ‘মোংলা কমিউটার’ নামে একটি ট্রেন চলাচল করবে। খুলনা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত চলাচল করে বেতনা এক্সপ্রেস নামে একটি লোকাল ট্রেন। সেই ট্রেনটি ফেরার পথে খুলনার ফুলতলা জংশন থেকে মোংলার দিকে যাত্রা করবে, তখন ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ট্রেনটি ‘মোংলা কমিউটার’ নাম ধারণ করে চলবে।

তিনি আরো জানান, ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মঙ্গলবার। খুলনা থেকে ভোর সোয়া ৬টায় ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়। বেনাপোল থেকে ছেড়ে মোংলা পৌঁছাবে বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে। ফুলতলা থেকে যাওয়ার পথে মোংলা কমিউটার মোহাম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাঠি বাজার রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে। মোংলা থেকে বেলা ১টায় ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সাড়ে ৪টায়। ভারত সরকারের ঋণসহায়তা চুক্তির আওতায় খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এল অ্যান্ড টি এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।

উল্লেখ্য, দেশের বৃহত্তম দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত মোংলা খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদ ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে বন্দরের অবস্থান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত কম খরচে মালামাল নিতে পারবেন। গতিশীল হবে মোংলার সঙ্গে যাতায়াত সুবিধা।

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্দ্যোগে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন বাগাতিপাড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:(নাটোর). “গাছে গাছে ভরবো দেশ, আসবে দেশে সবুজ ছায়ার পরিবেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে …