নিউজ ডেস্ক:
বরেণ্য অভিনেতা ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের। একুশে পদকপ্রাপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা নাট্যাঙ্গন হারালো এক পুরোধা বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে।
টেলিভিশন নাটকে তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা আলী যাকের। ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি’, ‘পাথর’, ‘দেয়াল’সহ বহু নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান তিনি। বেতারে ৫০টির বেশি নাটক করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন বেশ কিছু চলচ্চিত্রে।
শুধু টিভি আর চলচ্চিত্রই নয়। মঞ্চ নাটকেও অনন্য ছিলেন নাট্যজন আলী যাকের। মঞ্চের নির্দেশনা আর অভিনয় দুটোতেই তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। আলী যাকের ১৯৭২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ওই বছরেরই জুন মাসে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। তখন থেকে নাগরিকই তাঁর ঠিকানা।
‘বাকি ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘কোপেনিকের ক্যাপটেন’, ‘গ্যালিলিও’, ‘ম্যাকবেথ’সহ অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকের অভিনেতা ও নির্দেশক তিনি। পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেও তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা।
একই সঙ্গে দেশীয় বিজ্ঞাপন শিল্পেরও একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক লিখেছেন। নানা বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখিও করেছেন দীর্ঘদিন। প্রকাশিত হয়েছে বই—‘সেই অরুণোদয় থেকে’, ‘নির্মল জ্যোতির জয়’। শখ করে ফটোগ্রাফিও করেন তিনি।
১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামের রতনপুরে জন্মগ্রহণ করেন এ নাট্য ব্যক্তিত্ব। আলী যাকের ছিলেন চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
আলী যাকের নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পূর্ণ সদস্য। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৮-তে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেতা আলী যাকের। বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি।
স্ত্রী স্বনামধন্য অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের ও মেয়ে শ্রেয়া সর্বজয়া। সব ছেড়ে শুক্রবার সকালে তিনি পাড়ি দেন না–ফেরার দেশে।
সূত্র: ডিবিসি