নিউজ ডেস্ক:
মাদকবিরোধী অভিযান বদলে যাচ্ছে। আসছে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা। বন্দুকযুদ্ধ বা ধরপাকড় নয়, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা, কাউন্সেলিং ও সচেতনতা বাড়িয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব সংস্থা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ। এজন্য বিশেষ তিনটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে।
একটি অ্যাপসে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা মনিটর করা হবে, আরেকটিতে পরিচয় গোপন রেখে দেওয়া যাবে মাদকাসক্ত কিংবা মাদক কারবারির তথ্য, আরেকটি অ্যাপসে মাদক নিরাময়ের তথ্য মনিটর করা হবে। একটি ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে এ অ্যাপসে তথ্য দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে। গত ২৯ নভেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে মাদক নিয়ন্ত্রণে ‘কমপ্রিহেনসিভ অ্যাকশন প্ল্যান’ নামে এ পরিকল্পনার খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সমন্বিত এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নামবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। ডিএনসি কর্মকর্তারা বলছেন, এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে মাদকের কারবার। আজ রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা বিভাগের কর্মশালা উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সেমিনারে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগের সব কটি জেলার ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন। দ্রুততম সময়ে পর্যায়ক্রমে অন্য সাত বিভাগে এ ধরনের কর্মশালা চালু করা হবে। এরপর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেমিনার করে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। এবার সারা দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে কার্যক্রম চালানো হবে। এ কাজে সহযোগিতা করবেন জনপ্রতিনিধি, স্কুলের শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ সর্বস্তরের মানুষ। ডিএনসি মাদকের সরবরাহ বন্ধ, চাহিদা রোধ ও ক্ষতি হ্রাস বা নিরাময়ের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। এ তিনটি অ্যাপসের সমন্বয়ে ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ অনুসারে প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে জোর দেওয়া হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের মেম্বার, মসজিদের ইমাম, স্কুলশিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে নিয়মিত সভা-সেমিনার করে মাদকবিরোধী সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন। এজন্য থাকবে আলাদা কর্মপরিকল্পনা। প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আলাদা কমিটি তাদের ওয়ার্ডগুলোর স্কুল-কলেজে মাদকবিরোধী সেমিনার, ওয়াজ-বয়ান, ক্রিকেট-ফুটবল খেলার আয়োজনসহ কী ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করবে এর একটি বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবে। সচেতনতামূলক কাজের তৈরি অ্যাপসে ওই কর্মপরিকল্পনা বিস্তারিত দিতে হবে। কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিত তদারক করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএনসি। এরপর বাস্তবায়ন হবে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং। কোন গ্রাম বা এলাকায় কারা মাদকাসক্ত আছে তা আলাদা আরেকটি অ্যাপসে জানানো যাবে। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা পরিবার পরিকল্পনার সদস্যরা ওই বাড়িতে গিয়ে মাদকাসক্তের খোঁজখবর নিয়ে কাউন্সেলিং করাবেন। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ও পরিবার পরিকল্পনার সদস্যদের মানসিক চিকিৎসার বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেসব মাদকাসক্তের অবস্থা বেশি নাজুক তাদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা, প্রয়োজনে জেলায় কিংবা ঢাকায় কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। কোন ওয়ার্ডে কতজন মাদকাসক্ত রয়েছে এবং তাদের পুনর্বাসনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা-ও ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করা হবে। সর্বশেষ কাজটি হচ্ছে অপারেশনাল। আলাদা আরেকটি অ্যাপসে দেওয়া যাবে এলাকাভিত্তিক মাদক কারবারির তথ্য। ওই ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে ওই অ্যাপসে তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে। তথ্যদাতার নাম-পরিচয় গোপন রেখে মাদক কারবারিকে গ্রেফতারে অভিযানে যাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রতিটি জেলার মাদক কারবারিদের গ্রেফতারের বিষয়টি তদারক করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি)। এ তিনটি অ্যাপসের তথ্যই ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়নে, এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক (ডিসি), বিভাগীয় কমিশনার, ডিএনসি হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাবে। ২০১৮ সালের ৪ মে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী যুদ্ধ শুধু ধরপাকড়ে সীমাবদ্ধ থাকায় তেমন সফলতা আসেনি। চলমান এ অভিযানে অনেক কারবারি গ্রেফতার ও বন্দুকযুদ্ধে ৬ শতাধিক নিহত হলেও কমেনি মাদকের বিস্তার। ইয়াবা, ফেনসিডিলের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথের (আইস) ঢল নামতে শুরু করেছে। এজন্য চাহিদা রোধ করে সরবরাহ বন্ধ করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে এ মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মহল্লায় যখন মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে সবাই অবগত হবে, তখন আর মাদকের দিকে ঝুঁকবে না কেউ। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক মাদক কারবারিরাও আইনের আওতায় আসবে। তখন এমনিতেই মাদকের চালান থেমে যাবে।
ডিএনসি মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবদুস সবুর মণ্ডল বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমন্বয়ে শুরু করতে যাওয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে মাদক। এ পরিকল্পনায় মাদকের সরবরাহ রোধ, চাহিদা কমানো, নিরাময়সহ সব ধরনের পদক্ষেপ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটিই উদ্দেশ্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া।’
কারাবন্দিদের ৭৫ শতাংশই মাদকের আসামি : উন্নত ও অনুন্নত সব রাষ্ট্রেই মাদক অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। কারাগারে যে হাজতিরা রয়েছেন তাদের অপরাধের দিকে তাকালেও মাদকের ভয়াবহতা টের পাওয়া যাবে। সারা দেশের হাজতির ৭৫ শতাংশই মাদক মামলার আসামি। অর্থাৎ যেভাবে জনগণকে সম্পৃক্ত করে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করা হয়েছে, একইভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে মাদককে প্রতিহত করতে হবে। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। মাদকের লাগাম টানতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে এবার ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ নামে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। শুধু ধরপাকড় নয়, একদম গ্রামপর্যায়ে মাদকের চাহিদা হ্রাস ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা বা পুনর্বাসনে কাজ করা হবে। এ কাজে সম্পৃক্ত থাকবেন মসজিদের ইমাম, শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএনসির ডিজি মো. আবদুস সবুর মণ্ডল। তিনি বলেন, সমন্বিত এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। দ্রুতই দেশের সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেমিনার করে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা’ কর্মশালায় জানানো হয়েছে। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন জেলার ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে যদি দেশের সব স্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়, তাহলে মাদকের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এ জন্য মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, এনজিও, সুশীল সমাজসহ সবারই সম্পৃক্ততা জরুরি। আইস-এলএসডিসহ আরও ভয়ংকর মাদক দেশে আসছে। বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন না হলেও টেকনাফ-বান্দরবানের দুর্গম সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন মাদক আসছে। ইতোমধ্যে দুর্গম জায়গাগুলোতে নজরদারি কড়াকড়ি করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই ডোপ টেস্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে মাদকের চাহিদা রোধে সমাজ যদি এগিয়ে না আসে, যুবসমাজকে যদি মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বোঝাতে না পারি, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে যদি মাদকমুক্ত না রাখতে পারি, তাহলে কিছুই সম্ভব হবে না। আমাদের তৎপরতার কারণে এখন আর কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করে না। অনেকে ভ্রান্ত ধারণা থেকে মাদকের পথে পা বাড়াচ্ছে। এ জন্য আমাদের গোড়ায় কাজ করতে হবে। রুট লেভেলে মাদক নির্মূলে জোর দিতে হবে।’ বক্তব্যের শেষে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জন, জনপ্রতিনিধিসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বাগত বক্তব্যে ডিএনসির ডিজি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নতুন নতুন মাদকের প্রাদুর্ভাবে যুবসমাজ হুমকির মুখে পড়েছে। এ জন্য সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তবে যে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জিং। এ জন্য প্রশাসনিক জবাবদিহি ও মনিটর থাকা জরুরি। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সবকিছু মনিটর করা হবে। এ পরিকল্পনায় মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি, অভিযান পরিচালনা ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ করা হবে। মাদক নির্মূলে যা যা করা দরকার ডিএনসি করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গত ছয় মাসে ডিএনসির ডাটাবেজে ৭০ হাজার মাদকাসক্ত ও ১০ হাজার চোরাকারবারির তথ্য এন্ট্রি করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরাও মাদক নিরাময় কেন্দ্র পরিদর্শন করতে পারবেন।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ গড়তে হবে। কিন্তু মাদকের কারণে সেটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঢাকা রেঞ্জের গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যানেও ফুটে ওঠে মাদকের ভয়াবহ চিত্র। গত পাঁচ বছরে ঢাকা রেঞ্জে মোট মামলা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৯২টি, যার মধ্যে ৭৮ হাজার ৪৮৭টি মাদকের মামলা। শতকরা হিসাব করলে যা মোট মামলার ৪৬ শতাংশ। ঢাকা রেঞ্জে প্রতিবছর গড়ে ১৬ হাজার মাদক মামলা হচ্ছে, বিপরীতে গড়ে গ্রেফতার হচ্ছে ২০ হাজার। বছরে গড়ে উদ্ধার হচ্ছে ৪০ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য। এ ছাড়া বর্তমানে ২১ হাজার মাদক মামলা চলমান রয়েছে, যার ১৬-১৭ হাজার মামলার আসামি জামিনে রয়েছে। এসব কিছু মাথায় নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। ফলে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা জরুরি ছিল। এর বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে হবে।’
উন্মুক্ত আলোচনায় গোপালগঞ্জ জেলার ডিসি শাহিদা সুলতানা বলেন, মাদক একদিকে কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে। এ জন্য রুট পয়েন্টগুলো খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঢাকা জেলার ডিসি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, মাদক নির্র্মূলে প্রতিটি এলাকায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ মাসে অন্তত দুবার জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করতে হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিসি মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথাকথিত সোর্সরাই মাদকের বড় ডিলার হিসেবে কাজ করে থাকে। অথচ মাদক নির্মূলে নারীদের সোর্স হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। কারণ মাদকাসক্তদের হাতে নারীরাই বেশি নির্যাতিত হয়ে থাকেন। কিশোরগঞ্জ জেলার ডিসি মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এতে আমরা জয়ী হব।’ এ ছাড়া পুলিশের শরীয়তপুর জেলার এসপি এস এম আশরাফুজ্জামান বলেন, মাদক নির্মূলে জনসচেতনতা বাড়ানোসহ রুট লেভেল থেকে কাজ করতে হবে।