ড. আতিউর রহমান:
আসলেই বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজ খুবই দ্রুত বদলে যাচ্ছে। শহর ও গ্রামের পার্থক্য দিন দিন ঘুচে যাচ্ছে। কোটিখানেক প্রবাসী কর্মী গ্রাম থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন। তারা শুধু অর্থই পাঠান না, বিদেশ থেকে আধুনিক জীবন চলা ও প্রযুক্তির বার্তাও তাদের পরিবারে বয়ে আনেন। ফলে গ্রামীণ জীবন ও জীবিকার ধরন দ্রুতই পালটে যাচ্ছে। একইভাবে প্রায় কোটিখানেক গ্রামীণ তরুণ-তরুণী এখন গার্মেন্ট ও অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানায় কাজ করছেন। তারাও অর্থ পাঠানোর পাশাপাশি শহরের জীবন চলার নানা দিক গ্রামীণ জীবনে যুক্ত করছেন। ফলে শহর ও গ্রামের মধ্যে আর্থসামাজিক সংযুক্তি দ্রুতই বাড়ছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’র উন্নয়ন অভিযান এই সংযুক্তির ধারাকে আরো বেগবান করে চলেছে। গ্রামীণ মানুষের আয়-রোজগারও তাই বাড়ছে। করোনার এই সংকটকালেও বিপর্যস্ত অনেক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজের সক্ষমতা আগের চেয়ে ঢের বেড়েছে। কল্পনা করা যায় না ৫০ বছরে গ্রামবাংলার কি বিস্ময়কর পরিবর্তনই না ঘটে গেছে। অথচ কি বিপর্যস্তই না ছিল স্বাধীনতার ঊষালগ্নে গ্রামীণ অর্থনীতির চেহারা। গতিময় কৃষি এক্ষেত্রে চালকের ভূমিকা পালন করে চলেছে।
মুক্তিযুদ্ধোত্তরকালে ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি দেশকে দাঁড় করানো মোটেও সহজ ছিল না। মনে রাখতে হবে, সে সময়ে আমাদের অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার। আমাদের সঞ্চয়-জিডিপির হার ছিল ৩ শতাংশ। আমাদের রিজার্ভ ছিল শূন্য। বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ৯ শতাংশ। এমন শূন্য হাতে বঙ্গবন্ধু রওনা হয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়বার জন্যে। তাকে যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করতে হয়েছে একেবারে গোড়া থেকে। ১ কোটি শরণার্থীকে পুনর্বাসন করতে হয়েছে। দেশের ভেতরে বাস্তুচ্যুত ২০ লাখ মানুষের ঘড়বাড়ির ব্যবস্থা করতে হয়েছে। নিষ্ঠার সঙ্গে এই বিশাল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নিজের আজীবন লালিত ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার এক দূরন্ত অভিযান শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার মূল ভাবনার জায়গায় ছিল এ দেশের কৃষক, মজুর ও দুঃখী মানুষকে দুর্দশা থেকে তুলে নিয়ে আসা। তার নিজের ভাষায়—‘এই স্বাধীনতা তখনই আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলাদেশের কৃষক, মজুর ও দুঃখী মানুষের সকল দুঃখের অবসান হবে।’ (শেখ হাসিনা ও বেবি মওদুদ সম্পাদিত ‘বাংলা আমার, আমি বাংলার’, পৃষ্ঠা ৫১)।
স্বভাবতই বঙ্গবন্ধু সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন গ্রামবাংলার উন্নয়ন ও কৃষির বিকাশকে। ফলস্বরূপ দেশ দ্রুত এগিয়েও যাচ্ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথ ধরে। কিন্তু অপশক্তিগুলোর চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দেশ হয়ে পড়ে বিপথগামী। অমিত সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশের দুরন্ত যাত্রা হঠাত্ থমকে যায়। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫-এর মধ্যে মাথাপিছু আয় প্রায় তিন গুণ বেড়ে ২৭৩ মার্কিন ডলারে ঠেকেছিল। অথচ তাকে হারানের পর পরই ১৯৭৬-এ তা নেমে যায় ১৩৯ মার্কিন ডলারে, তার পরের বছর আরো কমে হয় ১২৯ মার্কিন ডলার। বঙ্গবন্ধু-পরবর্তী শাসনামলে পুরো সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে ধীর লয় দেখা যায় তার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হয় গ্রামবাংলা। সত্তরের দশকের শেষ ভাগে এ দেশ নিয়ে অর্থনীতিবিদ কিংবা উন্নয়ন গবেষকদের লেখা পত্রে দেখা যায় এক করুণ চিত্র। বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে সত্যিই মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছিলেন নাগরিকেরা। ঐ সময়টায় দেশের ৮০ শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছিলেন। দারিদ্র্যের কষাঘাতে সবচেয়ে জর্জরিত ছিলেন গ্রামবাসীরা। একদিকে তাদের ঘরে খাবার ছিল না, পরিবারের আকার ছিল বড়, শিশুমৃত্যু হার ছিল উচ্চ, সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল খুবই ক্ষুদ্র, সুপেয় পানি ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ ছিল না বললেই চলে। অন্যদিকে আয়ের জন্য তারা প্রায় এককভাবে কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। দুর্বল কৃষি খাতের কারণে তাদের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনাও ছিল ক্ষীণ।
১৯৯০-পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র ফিরে এলে অর্থনীতি ধীরে ধীরে গতি পেতে শুরু করে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের অভিযাত্রায় এক নবজাগরণ ঘটলেও ২০০১ সালে আবারও তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শাসনভার কাঁধে তুলে নেওয়ার পর গত এক দশকে গ্রামবাংলার চিত্র একেবারেই বদলে গেছে। দারিদ্র্যের হার আগের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগে নামিয়ে আনা গেছে (২০ শতাংশের আশপাশে), কৃষি উত্পাদন বহু গুণে বেড়েছে, কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে পাঁচ থেকে দশ গুণ। বিদ্যুত্ সংযোগ, মোবাইল ফোনের সহজ লভ্যতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ জীবনমান বেড়েছে ঈর্ষণীয় মাত্রায়। সর্বোপরি কৃষির বাইরে অকৃষি খাতে গ্রামাঞ্চলেও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গ্রামীণ আয়ের বড় অংশটিই এখন আসছে অকৃষি খাত থেকে। দেশের গ্রামাঞ্চল একদিকে বর্ধিষ্ণু শিল্প ও সেবা খাতের কাঁচামাল ও মূল্য সংযোগিত পণ্য/সেবা সরবরাহ করছে; অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে মানুষের আয় বৃদ্ধির ফলে নতুন ভোক্তা হিসেবে তারা অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা বৃদ্ধিতেও রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। অর্থনৈতিক কাঠামোর ভেতরে এই মাত্রার স্বনির্ভরতা রয়েছে বলেই এই কোভিড মহামারিকালেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো করছে। অবশ্য, কোভিড মহামারি অতিদারিদ্র্য ও দারিদ্র্য উভয় ক্ষেত্রেই বড় রকমের আঘাত হেনেছে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরেই এই আঘাত বেশি করে লেগেছে। কেননা, শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বড় অংশই জীবিকার জন্য অনানুষ্ঠানিক খাতের ওপর নির্ভরশীল। আর মহামারির আঘাতটা সেখানেই বেশি করে পড়েছে।
তবে এ কথা মানতেই হবে যে, গত একদশকে গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, তা সত্যিই অতুলনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুবিবেচনাপ্রসূত নীতি ও সেগুলোর বেশির ভাগের সুদক্ষ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো গ্রাম এখন নগরের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছে। একই সঙ্গে মানুষের নিজেদের উদ্যোগ, সামাজিক পুঁজির প্রয়োগ এবং অ-সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয়তার কথাও ভুললে চলবে না। ব্যক্তি খাতও কিন্তু পিছিয়ে নেই। গ্রামেও এখন সেবা খাতের তত্পরতা প্রায় সমান দৃশ্যমান। চায়ের দোকান, কফি শপ, রেস্তোরাঁ, সেলুন, বিউটি পার্লার, কিন্ডারগার্টেন স্কুল, কোচিং সেন্টার, হেলথ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাইবার ক্যাফের উপস্থিতি এখন গ্রামাঞ্চলেও খুব স্বাভাবিক। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ কমেছে ঠিকই কিন্তু গ্রামাঞ্চলে অকৃষি কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তা সামাল দেওয়া গেছে ভালোভাবেই। পরিসংখ্যান বলছে, এখন গ্রামীণ আয়ের ৬০ শতাংশ আসে অকৃষি খাত থেকে। তরুণ শিক্ষিত উদ্যোক্তারা বিশেষ করে ডিজিটাল উদ্যোক্তারা এই খাতে এখন বেশি বেশি যুক্ত হচ্ছেন। অকৃষি খাতের এই উন্নতির পেছনে কৃষি খাতের ভূমিকাও কম নয়। উপকরণ সরবরাহ ও চাহিদা বৃদ্ধির ফলে অকৃষি খাতকে চাঙ্গা রাখছে কৃষি। বস্তুত আমরা দুই পায়েই হাঁটছি।
মনে রাখা চাই যে, এখনো মোট শ্রমশক্তির ৪০ শতাংশ কৃষি খাতেই নিযুক্ত আছে। সরকারও তাই কৃষির দিকে নীতি মনোযোগ অব্যাহত রেখেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি বাজেটে কৃষি খাতে বাড়তি বরাদ্দ দিয়েছেন। বস্তুত তিনি কৃষিতে ভর্তুকি নয়, বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে। কৃষি গবেষণায় বেশি বেশি নীতি সমর্থন থাকায় নতুন নতুন জাতের ধান, গম, ভুট্টা ও সবজির উত্পাদন বেড়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু ১৩টি জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। তা ছাড়া ২০১৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকরা। এর বাইরে পাটের কয়েকটি নতুন জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি পাটের জীবন রহস্যও উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা প্রতিষ্ঠান। কৃষিতে এমন বিপ্লবের ফল হিসেবেই ১৯৭২-এর তুলনায় আজ আমাদের উত্পাদন ২৫ গুণেরও বেশি। আমাদের কৃষকরা ৮০-৯০ শতাংশ প্রযুক্তিনির্ভর। খাদ্য উত্পাদনের সূচকে আমরা পেছনে ফেলেছি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম এমন কি চীনকেও।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে জীবনমানের যে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে তার পেছনে কাজ করেছে কৃষির আধুনিকায়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, অকৃষি খাতের বিস্তার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার এবং সর্বোপরি প্রবাসী আয় বৃদ্ধি। তবে এসবগুলো শক্তিকে এক সূত্রে গাঁথতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে সরকারের যথাযথ সহায়তায় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিচালিত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অভিযান। এক দশক আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অভিযান শুরু হয়েছিল তার পেছনে মূল ভাবনাটিই ছিল সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগণের কাছে সহজে উপযোগী আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়া। উদ্ভাবনী আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নীতির কল্যাণে সর্বশেষ বৈশ্বিক মন্দার মুখেও সামষ্টিক অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ। এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, চলমান করোনাজনিত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রেও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অভিযানের ওই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে উদ্ভাবনী ও ডিজিটাল আর্থিক সেবার টেকসই প্রসার নিশ্চিত করতে হবে। আর এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে ‘অর্থনীতির রক্ষা কবচ’ কৃষি ও এসএমই খাতকে।
করোনা সংকট মোকাবিলায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা রাখার স্বার্থে প্রধান প্রধান কয়েকটি নীতি উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে:১. করোনার পাশাপাশি উপর্যুপরি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি পুনর্বাসন, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন অপরিহার্য। সে জন্য রবি মৌসুমে ভুট্টা, মাষকলাই, সবজি বীজের পর্যাপ্ত সরবরাহের পাশাপাশি বোরো চাষের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বোরোর বীজ, সার ও পানি সরবরাহে কোনো বাধা যেন না পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। ২. বোরো ও রবি ফসলের বীজ ও অন্যান্য উপকরণ কেনার জন্য যে সব ছোট ও মাঝারি কৃষকদের চলতি মূলধন দরকার তাদের চিহ্নিত করে ১০ টাকার ব্যাংক হিসেবে (কৃষি কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ই-কেওয়াইসি নিশ্চিত করে) যথাক্রমে ১০ হাজার ও ২০ হাজার টাকার ঋণ প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় দ্রুত বিতরণে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ ও মনিটর করতে হবে। ৩. কৃষকদের উত্পাদিত সবজির মূল্য নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ লাইন, জেলখানা ও সরকারি হাসপাতালে এসব উপযুক্ত দামে সরবরাহ করা যেতে পারে। ৪. মধ্যস্বত্বভোগী এড়িয়ে নগরের বাজারের সঙ্গে ই-কমার্সের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগের তৈরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ফুড ফর নেশন’কে সক্রিয় করতে হবে।
৫. কৃষি পণ্যের সাপ্লাই চেইন সক্রিয় রাখতে ডিজিটাল মার্কেটিং-বিষয়ক স্টার্টআপগুলোকে বিশেষ সমর্থন দিয়ে শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করতে হবে।
৬. কৃষি, মাইক্রোফাইন্যান্স এবং কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য দেওয়া প্রণোদনা কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়নে ব্যাংক ও অন্যান্য অংশীজন যাতে তত্পর হয়, সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও স্থানীয় প্রশাসন যেন কাঙ্ক্ষিত ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা সচল রাখতে সচেষ্ট থাকে তা নীতিনির্ধাকরদের নিশ্চিত করতে হবে।
মোদ্দা কথা, গ্রামীণ অর্থনীতিই যেহেতু সামগ্রিক অর্থনীতির ভিত্তিভূমি, তাই তাকে গতিময় রাখতে সকল অংশীজনকেই সক্রিয় থাকতে হবে। গ্রামীণ কৃষি ও অকৃষি আয় থেকেই অভ্যন্তরীণ চাহিদার বড় অংশ তৈরি হয়। এই চাহিদা চাঙ্গা রাখতে পারলে নিশ্চয়ই অর্থনীতি এই সংকটকালেও পথ হারাবে না।
লেখক :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর