নিউজ ডেস্ক:
মিরসরাইয়ের সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছে প্রান্তিক কৃষক। পাশাপাশি ছড়ায় বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম লেক তৈরির কারণে পর্যটকদেরও কাছে টানছে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। প্রকল্পটির অবস্থান উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত পাহাড়ে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মিরসরাই উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান যায়যায়দিনকে জানান, প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে স্থানীয় কৃষকরা সুবিধা পেতে শুরু করেছে। পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এসময় তিনি আরও জানান, পর্যটকদের যাতায়াত সুবিধার জন্য এখানে সড়ক এবং ৪টি সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটির আদ্যোপান্ত ঘেঁটে জানা গেছে, ২০০৬ সাল নাগাদ স্থানীয় ৩টি গ্রামের ৬শ’ কৃষকের সমন্বয়ে এখানে গঠিত হয় সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সংগঠন। এর নেতৃত্ব দেন মিরসরাই উপজেলা আওয়মী লীগের সহ-সভাপতি এসএম সরোয়ার উদ্দিন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সমবায়ের সদস্যরা নিজেদের টাকায় ১০ শতক জমি করেন এবং পরে সরকারের এলজিইডি ৪৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্পের কাজে হাত দেয়। এরপর বারোমাসি সোনাইছড়ার মুখে বাঁধ নির্মাণ ও বর্ষাকালে পানি ধরে রাখার জন্য রেগুলেটর নির্মাণ করা হয়। একই সঙ্গে ছড়ার সঙ্গে সংযুক্ত ৩ কিলোমিটার খাল সংস্কার করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়।
মিরসরাই উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (খৈয়াছড়া ইউনিয়নে দায়িত্বরত) মোহাম্মদ শাহজাহান যায়যায়দিনকে জানান, সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর থেকে প্রতি বছর অনাবাদি জমি কমছে আবাদি জমি বাড়ছে। ২০২০ সালে এখানে ১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হতো, চলতি বছর যা ২০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। এ ছাড়া এ প্রকল্পের পানি দিয়ে আউশের বীজতলা প্রস্তুত, রবিশষ্যসহ প্রায় ১শ’ হেক্টর আনাবাদি জমি আবাদের আওতায় এসেছে।
সোনাইছড়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের নির্বাহী সভাপতি এসএম সরোয়ার উদ্দিন যায়যায়দিনকে জানান, সোনাইছড়ার উপরিভাগে রয়েছে নয়নাভিরাম একটি ঝর্ণা। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় কৃত্রিম লেক তৈরির কারণে এখানে পর্যটকরা নিয়মিত যাতায়াত করছে। সরকারের পর্যটন বিভাগ যদি এখানে কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তাহলে পর্যটনের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, সমিতির পক্ষ থেকে লেকে প্যাভেল চালিত বোট ও কায়াকিং ছাড়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।