অহিদুল হক, বড়াইগ্রামঃ
বড়াইগ্রামে স্কুল শিক্ষিকার ফ্রি অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পৌঁছার সুযোগ পাচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা। সম্পুর্ণ নিজ খরচে এ মহান উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলার নগর ইউনিয়নের দোগাছী গ্রামের বাসিন্দা ও মেরিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শেফালী খাতুন।
গত ২ মাস যাবৎ শুধু চালকের একবেলা খাবারের বিনিময়ে এলাকাবাসীকে এ অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে আসছেন তিনি। জানা যায়, অনেক দিন থেকেই তিনি মানুষের সেবা করার স্বপ্ন দেখেছেন। সে স্বপ্ন পুরণে তিনি একটি অ্যাম্বুলেন্সের কেনার পরিকল্পনা করেন। তারপর ধীরে ধীরে ৬ বছর যাবৎ বেতনের কিছ কিছু টাকা সঞ্চয় করেছেন, অবশেষে তাঁর জমানো টাকায় কিনেছেন একটি অ্যাম্বুলেন্স। তাতে এখন বিনা পয়সায় সেবা পাচ্ছে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা দোগাছী, মশিন্দা, দিঘলকান্দী ,লক্ষীচামারী, মনপিরিত, মেরীগাছা, চুলকাটিয়া ,কুজাইলসহ মোট ৮ টি গ্রামেরর মানুষ।
এ পর্যন্ত ৪৫ জন রুগী এ সেবা নিয়েছে ও দুইটি মরদেহ বাড়িতে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। দৌগাছী গ্রামের লিমন জানান, সেবাটি মূলত এলাকার গরীব অসহায় মানুষদের জন্যে। এটি চব্বিশ ঘন্টাই চালু থাকায় এলাকার মানুষ খুবই উপকৃত হচ্ছে। মশিন্দা গ্রামের মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, এ সেবা পেয়ে আমি অনেক উপকৃত হয়েছি। হয়তো সেইদিন আমি মারাই যেতাম যদি দৌগাছী গ্রামের ওই অ্যাম্বুলেন্স না আসতো। অ্যাম্বুলেন্সে সেবা পেয়ে আমার অনেক উপকার হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘যেখানে এলাকার গরিব মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া মেটানো দু:সাধ্য। এই পরিস্থিতিতে শেফালী ম্যাডামের ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, ড্রাইভারের একবেলা খাবারের বিনিময় অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে যা অনেক বড় পাওয়া।
’ এ উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শেফালী খাতুন বলেন, গ্রামের দরিদ্র মানুষের দূর্ভোগ দেখে তাদের জন্য কিছু একটা করার চিন্তা করি কিন্তু টাকার অভাবে তা পেরে উঠতে পারি না। গ্রামের গরিব মানুষেরা অনেক সময় টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া যদি বেঁচে যায় তাহলে তাঁরা ভালো ভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক, শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার করে থাকেন তিনি।
এসব সেমিনার এর মাধ্যমে মানুষের মাঝে শিক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শেফালী খাতুন বলেন, একটা অ্যাম্বুলেন্স হওয়ায় অনেক সময় ৮ টি গ্রামে সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সরকারি-বেসরকারি কোন সহযোগিতা পেলে আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স কিনব। তাছাড়া সহযোগিতা পেলে মানুষের মধ্যে সচেতনামূলক সেমিনারের পরিধি বাড়ানোর ইচ্ছা আছে।
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / বড়াইগ্রাম / বড়াইগ্রামে স্কুল শিক্ষিকার ফ্রি এ্যাম্বুলেন্সে সেবা পাচ্ছেন রোগীরা
আরও দেখুন
বড়াইগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় ৩ জন আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক বড়াইগ্রাম,,,,,,,,,,, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় তিনজনকে আটক করেন বড়াইগ্রামের সহকারী …