নিউজ ডেস্ক:
তখনও আড়মোড়া ভাঙেনি ঢাকা, নেভেনি ল্যাম্পপোস্টগুলোর বাতি। একটু একটু করে ভাঙছে ভোরের নিস্তব্ধতা। পৌষের এমন সুন্দর সকালেই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা ম্যারাথন’
উৎসব শুরু হয়ে যায় আর্মি স্টেডিয়ামে। দেশ-বিদেশের প্রায় ৫৮০ দৌড়বিদের পদচারণায় মুখর তখন আর্মি স্টেডিয়াম। ভোরের আর্মি স্টেডিয়ামের শুরু এই ম্যারাথন বনানী-গুলশানের সকাল ভেঙে শেষ হয় হাতিরঝিলের পাড়ে। প্রত্যাশা মতোই এই ম্যারাথনের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছেন পূর্ব আফ্রিকার দৌড়বিদরা। ৪২ কিলোমিটারের এলিট ইভেন্টে প্রথম হন কেনিয়ার ডিসেন্ট কিপসিং রোনো। ২ ঘণ্টা ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ড সময় নিয়েছেন তিনি। নারীদের এই ইভেন্টেও প্রথম আফ্রিকানকন্যা মুলিয়ে ডেকেবো হায়লেমারিয়াম। ইথিওপিয়ার এই দৌড়বিদের সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ৩১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভোরে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে উদ্বোধন করেন এই আন্তর্জাতিক ইভেন্ট। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে এই ইভেন্টের আয়োজন করা হয়।
মূলত দুটি ভাগে এই ম্যারাথন আয়োজন করা হয়। ফুল ম্যারাথন (প্রায় ৪২.১৯৫ কি.মি) এবং হাফ ম্যারাথন (২১.০৯৭ কি.মি)। বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিও ছিল এই ম্যারাথনে। এলিট, বাংলাদেশ ও সাফ ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীর মধ্যে উৎসবের আমেজ ধরা দিয়েছিল। ফ্রান্স, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, ইউক্রেন, স্পেন, ইতালি এবং মরোক্কোর ১৯ জন এলিট দৌড়বিদ অংশ নেন। আর সাফ ক্যাটাগরিতে মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে সর্বমোট ১৬ বিদেশি দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করেন। ফুল ম্যারাথনে সাফ দৌড়বিদদের মধ্যে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন ভারতের বুগাথা শ্রীনু এবং নারী বিভাগে আরতি দত্তা রয় পাতিল। হাফ ম্যারাথনে চ্যাম্পিয়ন হন কেনিয়ার রনজাস লোকিটান কিলিমু এবং মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন ফ্রান্সের সৌকানিয়া এটনেইন। আকর্ষণীয় ইভেন্ট মূল ম্যারাথনের দেশি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন নৌবাহিনীর এসএ মো. আসিফ বিশ্বাস ও নারী বিভাগে সেনাবাহিনীর সৈনিক পাপিয়া খাতুন। এ ছাড়া হাফ ম্যারাথনে পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন সেনাবাহিনীর ল্যান্স করপোরাল মো. আল আমিন ও নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন শামসুন্নাহার রত্না।
এই আয়োজনে বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে ছিল আর্মি স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ড, ট্রাস্ট ইনোভেশন লিমিটেড এবং নেটওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেড। সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন।