নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় “জাতির পিতার সম্মান, রাখবো মোরা অম্লান” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে উপজেলায় কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীগন। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু। তিনি বলেন, জাতির পিতার সম্মানের প্রতি আঘাত আসলে রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। একটি মহল উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সহজ-সরল মানুষ গুলোকে উসকে দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু কিছু মৌলবাদ, ভন্ডপীরের অপব্যখ্যায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপিত জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকান্ড কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এসব ভন্ড পীর, আলেমদের অপব্যখ্যায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহŸান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ’ র সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ ও আলোচনা সভায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আফরোজ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ নাজমা আক্তার, উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন নাহার ভূঁইয়া, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার ওমর আলী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহিদুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর মামুনুর রশিদ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ডালিয়া পারভিন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মো. মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সুলতানুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বাংলাদেশের পরিচয়ের ঐতিহাসিক বন্ধন। যতদিন পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির জনকের অবদান চির অ¤øান হয়ে থাকবে। কোনোভাবেই জাতির জনকের কোনও ধরনের অবমাননা সহ্য করা হবে না। এছাড়াও তিনি জাতির পিতার প্রতি সম্মান রক্ষায় সকলকে একযোগে কাজ করাসহ যারা জাতির পিতাকে অসম্মান করার ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করার জন্য আহব্বান জানান।
সমাবেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আফরোজ বলেন,‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোন একক ব্যক্তি, গোষ্ঠি, স¤প্রদায় ও দলের নন, তিনি সমগ্র দেশ ও জাতির। তাই তাকে নিয়ে বিরোধিতা করা রাস্ট্রদ্রোহিতার শামিল। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে অনাহুত বিতর্ক সৃষ্টি বর্তমানে দেশে চলমান উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করারই চক্রান্ত।’
সভায় অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো দফতরে বসে জনগণের কাজ করা। কিন্তু আজ আমরা প্রতিবাদ সভা করছি। প্রতিবাদের যৌক্তিক কারণও আছে। আজ মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙেছে। একটি স্বাধীন দেশে এটা মেনে নেওয়া কঠিন। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ, এদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে পুঠিয়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ সমাবেশে শতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।