নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার স্থপতি, গণতন্ত্র ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার নাটোর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনলাইনে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন সহকারি শিক্ষক সাজ্জাদুল ইসলাম, আবু হানিফ, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল করিম, জালাল উদ্দিনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জুলিও কুরি’ শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী (২৩ মে)। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও শান্তি আন্দোলনে অবদান রাখায় ১৯৭৩ সালের এই দিনে বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে এ পুরস্করে ভূষিত করে। এ সম্মান পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন, ‘এ সম্মান কোনো ব্যক্তিবিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরসেনানীদের। ‘জুলিও কুরি’ শান্তিপদক সমগ্র বাঙালি জাতির।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পতি বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে। ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, লিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ বিশ্ব নেতাদের এই পদকে ভূষিত করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ হতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে তার উক্তি নিয়ে প্রকাশিত ই-পোস্টারের শিরোনাম করা হয়েছে ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার-বঙ্গবন্ধু। জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকীতে শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।’
এছাড়াও ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮ বছর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসরণ করে করোনা ভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়িয়ে দিবসটি উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের কাছে বিশ্ব শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি নিবেদিত ‘বিশ্ব শান্তির দূত: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক প্রমাণ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্রমাণ্যচিত্র সকল টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন মিডিয়ায় সম্প্রচার করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়। বিশ্ব শান্তি পরিষদের শান্তি পদক ছিল জাতির পিতার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান। এ মহান অর্জনের ফলে জাতির পিতা পরিণত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে।