নিউজ ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘরের যাত্রার সূচনা করবেন রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন। এরপর থেকে সারা দেশে ঘুরবে। চলবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে কোনো কোনো স্টেশনে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে এক দিন আবার কোনো কোনো স্টেশনে পাঁচ দিন পর্যন্ত অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরিকুল আলম।
একটি মিটারগেজ ও একটি ব্রডগেজ বিশেষ কোচে নির্মিত জাদুঘর দুটি দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ৩৫টি রেল স্টেশনে প্রদর্শিত হবে। জাদুঘরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মিটারগেজের জাদুঘরটির যাত্রা শুরু হবে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আর ব্রডগেজ জাদুঘরটির যাত্রা শুরু হবে গোপালগঞ্জ স্টেশন থেকে। পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম, ভাটিয়ারী, সীতাকুণ্ড, চিনকিআস্তানা, ফেনী জংশন, গুণবতী, নাঙ্গলকোট, লাকসাম জংশন, চৌমুহনী, মাইজদীকোর্ট, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরববাজার, নরসিংদী, টঙ্গী জংশন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা, ফতুল্লা, চাষাঢ়া ও নারায়ণগঞ্জ আর পশ্চিমাঞ্চলের গোপালগঞ্জ, কাশিয়ানি, ভাটিয়াপাড়া ঘাট, মধুখালী জং, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, পাংশা, কুমারখালী, কালুখালী জং ও কুষ্টিয়া প্রতি স্টেশনে দুই থেকে তিন দিন ধরে জাদুঘর দুটি অবস্থান করবে। মানুষকে জানাতে এবং জাদুঘর পরিদর্শনে আমন্ত্রণ জানাতে স্টেশনে জাদুঘর পৌঁছানোর আগে প্রচারণা চালাবে রেলওয়ে। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে এই জাদুঘর সবাই ঘুরে দেখতে পারবেন।
সিনিয়র তথ্য অফিসার শফিকুল আলম জানান, গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দুটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে তিনি বলেছিলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও অজানা তথ্য পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর ইতিহাস হয়ে থাকবে। অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করতে সরকার যোগাযোগব্যবস্থাকে সহজ করছে। অসাধারণ ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর নির্মাণ করায় রেলপথ বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতেই দেশের প্রথম ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর ‘বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। উদ্বোধনও হয়েছে। এখন শুধু প্রদর্শনীর পালা। একটি মিটারগেজ ও একটি ব্রডগেজ রেলকোচের ভেতরে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর প্রস্তুত করা হয়েছে। সারা দেশে বিস্তীর্ণ রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, জীবনাদর্শ, জাতির জন্য তার অনন্য ত্যাগ ও অবদানকে শহর থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ। বিভিন্ন ছবি, প্রতিকৃতি, ভিডিওসহ ডিজিটাল শিল্পকর্মের মাধ্যমে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তার কর্মজীবনকে মোট ১২টি ভাগে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে জাদুঘরে। জাদুঘরের প্রবেশপথ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনালেখ্য।
দেড় বছর সময় নিয়ে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দুটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার। তিনি জানান, জাদুঘর দুটিতে প্রবেশ করলে বঙ্গবন্ধুর শৈশবের দিনগুলো, এরপর ছাত্রজীবন, সংগ্রামী জীবন, অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কারাভোগের চিত্র ভেসে উঠবে। ’৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন।