নিজস্ব প্রতিবেদক,বড়াইগ্রাম:
প্রেম করে পরিবারের অমতে ছয় মাস আগে তমা খাতুন (১৪) বিয়ে করেছিলেন বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়নের দিঘইর কান্দিপাড়া গ্রামের মাহবুব হোসেন (১৮)কে। শুক্রবার বিকেলে সেই মাহবুব হোসেনের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তমার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানান,ছয় মাস আগে উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের কুশমাইল গ্রামের তাইদুল ইসলামের মেয়ে তমা খাতুন ভালোবেসে একই ইউনিয়নের দিঘইর গ্রামের আফসার আলীর ছেলে মাহবুব হোসেনকে বিয়ে করেন। তাঁদের এই বিয়েতে সম্মতি ছিল না দুই পরিবারের। তবে কিছুদিন পরে দুই পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়। বিয়ের পর থেকে তমা স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। স্বামী ছিলেন কর্মহীন। খুবই কষ্টে চলছিল তাঁদের সংসার। সাংসারিক বিষয় নিয়ে শুক্রবার সকালে তমা ও মাহবুবের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর বেলা সারে ১১টার দিকে মাহবুব বাজারে যায়। কিছুক্ষন পরে পরিবারের লোকজন তমার খোঁজ করতে গিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘড়ের তিরের সঙ্গে ঝুলছেন। পরে পুলিশ গৃহবধু তমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
তমার মা গোলাপী বেগম বলেন, তারা আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের জানাজানি হলে দুই পরিবার মিলে মেনে নেই। তখন কোন কিছু দাবী করা হয় নাই। কিছু দিন পর মাহবুবের মা ও বড় ভাই মহসীন যেীতুকের জন্য আমার মেয়েকে চাপ দিত। আমি গত ঈদের আগে ঘরে আসবাব পত্র কিনে দিয়েছি। কিন্তু তারা টাকার জন্য বলত। আমার টাকা না দিলে মেয়েকে মারপিটের হুমকি দিত।
তিনি আরো বলেন, শুক্রবার বেলা সারে ১১টার সময় আমার মেয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। তখন বলেছিল বসার একটি টুল নিয়ে আমার মেয়েকে বকাবকি করছে। এর পর থেকে আমার ফোন আর রিসিভ হয় নাই। আমি ১টার দিকে আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর পাই।
ঘটনার পর থেকেই তমার স্বামী মাহবুবকে বাড়িতে পাওয়া যায় নাই। তার মায়ের দাবী তমা ও মাহবুব আলাদা সংসার করে। ঘরে ভিতরে গ্যাসের চুলায় রান্না করে। তাদের ভিতরে কী হয়েছে আমরা কেউ জানিনা।
মাহবুবের বড় ভাই মহসীন বলেন, তাদের পারিবারিক কলহে আত্মহত্যা করেছে। আমি কখনও যৌতুকের জন্য কোন কথা বলি নাই।
তমার বাবা তাইদুল ইসলাম বলেন, আমার সন্তানের জন্য দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম। আমার মেয়েকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক আবু সিদ্দিক বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।