নিউজ ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি নির্যাতন নিয়ে মিথ্যাচার করে রাষ্ট্রবিরোধী নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছেন হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা। তবে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত তা অস্বীকার করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, হোয়াইট হাউজের ওই অনুষ্ঠানে সংগঠনের হয়ে অংশ নেননি প্রিয়া সাহা।
কিন্তু তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, হোয়াইট হাউজের অনুষ্ঠানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবেই যোগদান করেন প্রিয়া সাহা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম হাউজের একটি তালিকায় প্রিয়াকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দর্শনার্থী তালিকায় দেখানো হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাওয়াত দিলে তারা হোয়াইট হাউজে উপস্থিত হন। আরো জানা গেছে, সংগঠনের সদস্যের বাইরে সেখানে ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের কোনো সুযোগ ছিলো না। সুতরাং বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরে সুবিধা আদায়ের এই মিশনের উদ্দেশ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় গা বাঁচাতে রানা দাশ গুপ্ত প্রিয়া সাহার অপতৎপরতা অস্বীকার করছেন। দেশের বদনাম করে বৈদেশিক সহায়তা এবং স্বার্থ উদ্ধারের সম্মিলিত প্রচেষ্টার এই মিশন নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে রানা দাশ গুপ্ত ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে প্রিয়ার বক্তব্যকে অস্বীকার করছেন।
যদিও এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, প্রিয়া সাহা যা বলেছেন, তা তার ব্যক্তিগত অভিমত। এখানে সংগঠনের কোনো দায় নেই।
বিভিন্ন সূত্রের মারফতে জানা গেছে, প্রিয়া সাহা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-ঐক্য পরিষদের সদস্যদের সাথেই যাওয়া কথা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত ফ্লাইট মিস হওয়ায় তিনি পরবর্তী ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই অনুষ্ঠানেও প্রিয়া ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। সুতরাং হোয়াইট হাউজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্বার্থান্বেষী ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করার পরে তা ছড়িয়ে পড়লে জনরোষ এড়াতে রানা দাশ গুপ্ত অস্বীকার করে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন, যা দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। রানা দাশ গুপ্তের বক্তব্যে অবশ্য প্রিয়া সাহার কথিত বাড়ি-ঘর পোড়ানোর বিষয়টি এসেছে, যা সত্যি নয় বলেও জানা গেছে।
তবে একটি সূত্র বলছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, সরকারি চাকরির কোটা বাড়ানো, অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়েও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-ঐক্য পরিষদ তৎপরতা চালিয়েছিলো। তাদের এই অন্যায্য দাবিগুলোকে শক্ত ভিত দিতে প্রিয়া সাহাকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন রানা দাশ গুপ্ত। কিন্তু বিষয়টিতে দেশব্যাপী সমালোচনা সৃষ্টি হওয়ায় এখন নিজেকে নির্দোষ দাবি করার পাঁয়তারা করছেন তিনি। এদিকে নেটিজেনরা দাবি করছেন, এমন রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে প্ররোচনা, উসকানি দেয়া এবং দায় অস্বীকার করার অজুহাতে রানা দাশ গুপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।