নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল কে গালি দিতে নিষেধ করায় অফিস সহকারীকে বেধরক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও তার বাবা হাসেম ব্যপারীর বিরুদ্ধে।
এঘটনায় আজ দুপুর ১২ টায় ভুক্তভোগী অফিস সহকারী মোস্তফা ব্যপারী নাটোর সদর থানায় বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে গতকাল (৮ অক্টোবর) দুপুরে নাটোর সদর উপজেলার জংলী হামিদিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসায় ঘটে এই ঘটনা। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী অফিস সহকারী মো. মোস্তফা ব্যপারী নারদ বার্তা কে বলেন, শনিবার বেলা ২ টা ৪৫ মিনিটের দিকে মাদ্রাসা সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও তার বাবা প্রিন্সিপালের রুমে আসেন। এসময় তারা দু’জনই সম্ভবত টাকা-পয়সার হিসাব নিকাশ নিয়ে প্রিন্সিপাল কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন।
প্রিন্সিপালের রুমে উত্তেজনা দেখে আমি সেখানে যাই। গিয়ে শুধু এটুকুই বলি, যে এটা অফিস এখানে গালাগালি করার কি দরকার। একথা বলতেই সাইফুল (ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি) আমাকে বলে এই তুই কথা বলার কে। একথা বলতেই সাইফুলের বাবা আমাকে ২ ঘুষি মেরে দেয়। এরপর সাইফুলও এসে আমাকে মারতে শুরু করে। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা সবাই এসে ওদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে।
ভুক্তভোগী আরো জানান, এলাকায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নানা অপকর্ম করে থাকে সাইফুল ইসলাম। তাদের উশৃংখল ব্যবহারে প্রতিষ্ঠানটির সবাই অতিষ্ঠ, কিন্তু তাদের প্রভাবে কোনো শিক্ষক প্রকাশ্যে কথা বলতে পারেন না।
বিদ্যালয়ের অন্য একটি সূত্র নারদ বার্তা কে জানায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে এনটিআরসি’র মাধ্যমে নয়জন শিক্ষকের নিয়োগ হয়। তারপর থেকেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাদের থেকে মোটা অংকের টাকার দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু ওই সকল শিক্ষকরা অত্র মাদ্রাসার উন্নয়নে টাকা দিতে রাজী হলেও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা দিতে রাজি ছিলেন না। মূলত সেই বিষয় নিয়েই গতকাল মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের সঙ্গে সভাপতি ও তার বাবা’র তর্ক-বিতর্ক হচ্ছিল। তারই এক পর্যায়ে মোস্তফা ব্যপারী প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকে উত্তেজিত সভাপতি ও তার বাবাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা তাকে মারপিট ও লাঞ্চিত করে।
ঘটনাটি নিয়ে মাদ্রাসাটির প্রিন্সিপাল জালাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোস্তফা ব্যপারী অফিস সহকারী হলেও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকায় সে মাদ্রাসায় ক্লাস ও নিয়ে থাকে। সে সুবাদে সবাই তাকে শিক্ষক হিসেবেই দেখে। গতকাল তার সাথে যা ঘটেছে তা অন্যায় হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।
জানা গেছে, অভিযুক্ত মাদ্রাসা সভাপতি সাইফুল ইসলাম সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এবং তার বাবা হাশেম ব্যপারী একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি।
এইসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম নারদ বার্তা’কে বলেন, গতকাল অফিস রুমে আমার বাবার সাথে ওই অফিস সহকারীর কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাজনৈতিক ভাবে হেয় করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এই বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে মিমাংসা করে নিয়েছি।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, সকাল থেকে আমি থানাতে নেই। এসপি অফিসে মিটিং এ আছি। থানায় গেলে অভিযোগের বিষয়টি জানতে পারবো।