নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে এক কোটি ৩০ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’র মাধ্যমে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান নগদের মাধ্যমে এখন থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপবৃত্তির অর্থ পরিশোধ করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভোগান্তি কমাতেই সরকার নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য মাধ্যমে টাকা পাঠাতে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়। নগদের মাধ্যমে টাকা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে এবং তারা যখন ইচ্ছা তখন তুলতে পারবে। এতে খরচও কমে আসবে।
কয়েক বছর ধরে ‘শিউরক্যাশ’ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে এই উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হচ্ছিল। তবে ক্যাশআউট চার্জ ও ডাটা ম্যানেজমেন্টের জন্য ‘শিউরক্যাশ’কে এক হাজারে সব মিলিয়ে সাড়ে ২১ টাকা দিতে হতো। নগদ সরকারকে হাজারে মাত্র সাড়ে সাত টাকায় পুরো সেবা দেবে। নতুন এই চুক্তির আওতায় গত এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের বকেয়া উপবৃত্তিও ‘নগদ’ বিতরণ করবে।
প্রতিবছর প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়ায় উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। এতে সব মিলিয়ে সরকারের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে ওপেন টেন্ডার মেথড বা ওটিএম পদ্ধতিতে কাজটি নগদকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় নগদকে কাজটি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, শিউরক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ করতে গিয়ে গত তিন বছরে তারা অসংখ্য অভিযোগ পেয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ক্যাশআউটের জন্য পর্যাপ্ত এজেন্ট পয়েন্ট না থাকা বা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা রেখে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জনপ্রতি ৭৫ এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পাবে। এর আগে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিশুদের জন্য ৫০ টাকা এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পেত ১০০ টাকা।