নিউজ ডেস্ক:
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে সময়োপযোগী ও দেশীয় শিল্প বিকাশের সহায়ক উল্লেখ করে হিসাববিদদের সংগঠন দি ইন্সটিটিউট অব চাটার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) বলেছে, মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশীয় শিল্প বিকাশে যেসব কর সুবিধার প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে স্থানীয় উদ্যোক্তারা শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হবেন।
সংগঠনটি বলছে, করপোরেট করহার হ্রাস করার পাশাপাশি বাজেটে অটোমোবাইল-থ্রি হুইলার এবং ফোর হুইলার উৎপাদনকারী কম্পানিকে শর্ত সাপেক্ষে ১০ থেকে ২০ বছর কর অব্যাহতি এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পের পণ্যের উৎপাদনকারী কম্পানিকে শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছর মেয়াদি কর অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ সময়োপযোগী ও স্থানীয় শিল্প বিকাশে উৎসাহব্যঞ্জক।
শনিবার (৫ জুন) এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবি প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে এসব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মাহমুদুল হাসান খসরু ও সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবীর বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সহসভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন ও কাউন্সিল মেম্বর স্নেহাশীষ বড়ুয়া প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সংগঠনটির মতে জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার একটি সময়োপযোগী ও বড় আকারের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে সমন্বিতভাবে উত্তরণ ঘটাতে হবে, যা দূরহ হলেও অসম্ভব নয়। কভিড অতিমারির মধ্যে যেহেতু চলতি অর্থবছর ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, সুতরাং এবারের প্রস্তাবিত প্রবৃদ্ধির অর্জন সম্ভব হবে।
আইসিএবি নেতৃবৃন্দ বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবার (এমএফএস) ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমএফএস কম্পানিগুলোর কর হার ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং তালিকা বহির্ভূত হলে ৪০ শতাংশ কর প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনো এমএফএস প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় সব এমএফএস প্রতিষ্ঠানকে ৪০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এমএফএস সেবা ব্যবহারকারিরা যেহেতু দরিদ্র জনগোষ্ঠি, তাই তাদের বাড়তি খরচ গুনতে হবে। নেতৃবৃন্দ এমএফএস এর বাড়তি কর প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এছাড়া সংগঠনটি ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য বকেয়া বা অনাদায়ী মূসকের ওপর মাসিক ২ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ করার প্রস্তাবকে অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিক বলে উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি আইসিএবি নেতৃবৃন্দ তৃতীয় লিঙ্গের কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে করছাড়, ক্লাউড সার্ভিস, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ই-বুক প্রকাশনা, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস এবং আইটি ফ্রিল্যান্সিং সরবরাহকারীদের ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তবে তারা মুনাফার ওপর করহার বাড়ানোর প্রস্তাব পুনঃবিবেচনার দাবি জানিয়েছে।