শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / প্রসেস সার্ভার আব্দুল আওয়ালের নামে নানা রকম দূর্নীতির অভিযোগ

প্রসেস সার্ভার আব্দুল আওয়ালের নামে নানা রকম দূর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের প্রসেস সার্ভার আব্দুল আওয়ালের নামে বের হয়ে এসেছে নানা রকম দূর্নীতির অভিযোগ। দেয়ালে সাঁটানো একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চোখে আসে সম্প্রতি। সন্দেহ হলে অনুসন্ধানে নামে টিম নারদ বার্তা।ভুয়া নিয়োগের খোঁজ করতে গিয়ে একে একে বের হয়ে আসে নানা রকম অনিয়ম।

আব্দুল আওয়াল প্রসেস সার্ভার পদে কর্মরত নাটোর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যালয়ে। চাকরির পাশাপাশি তিনি ওলামা লীগ ও সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদের সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে জানা গেছে। সরকারী কর্মচারী হয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কি কোন বিধান রয়েছে-এব্যাপারে কোন উত্তর দিতে পারেননি আব্দুল আওয়াল। ২০১৯ সালে খুলেছিলেন বৃদ্ধাশ্রম ও পুঙ্গু স্কুল। যার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি কিংবা এব্যাপারে কোন তথ্যও দিতে পারেনিনি তিনি। এবারে খুলেছেন নাম বিহীন এক অফিস। যেটির নাম বা কোন রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার নেই। যেখানে নিয়োগ দেয়া হবে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নাম ব্যবহার করেছেন মিজানুর রহমানের। তবে তিনি এবারে কিছু জানেন না। অন্যজনের নাম ব্যবহার করলেও যোগাযোগের নাম্বারটি ব্যবহার করেছেন নিজের।নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নলডাঙ্গা উপজেলা মানবতার কল্যাণে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষে নিম্মবর্ণিত পদ সমূহের জন্য লোক নিয়োগ করা হবে। যেখানে ৫টি পদের বিপরীতে মোট ৪৫ জনকে নিয়োগ দেয়ার কথা উল্রেখ করা হয়। উপজেলা কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা,অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার অপারেটর, পৌরসভা/ ইউনিয়ন প্রতিনিধি, পৌরসভা/ ইউনিয়ন মাঠ কর্মী পদগুলোতে এইচএসসি থেকে এম.বিএ সমমান যোগ্যতা চাওয়া হয়।

ঠিকানার জায়গাতে উল্লেখ করা হয় মিজানুর রহমানের নাম, প্রধান শিক্ষক, রহিমা বেগম হাফেজিয়া মাদ্রসা, সেনভাগ লক্ষীকোল, বৈদ্যবেলঘরিয়া, নলডাঙ্গা, নাটোর।তবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মিজানুর রহমানের নাম ব্যবহার করলেও এখানে আব্দুল আওয়াল নিজের মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেছেন।এব্যাপারে মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগযোগ করলে তিনি জানান, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ব্যাপরে আমি কিছু জানি না। সে আমাকে কিছু বলেওনি। আমাকে তার মাদ্রাসাতে আরবি পড়াতে বলেছিল। আমি কিছু দিন হল সে কাজটিও ছেড়ে দিয়েছি। আব্দুল আওয়ালের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার আপন বড় ভাই আওরঙ্গজেব যিনি ১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন। বজলু রাজাকার যাকে একাত্তর পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করে হত্যা করে। তিনি ছিলেন আব্দুল আওয়ালের চাচা।

২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন জানান, এব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তবে আব্দুল আওয়ালের নামে যে অভিযোগগুলো শোনা যাচ্ছে এগুলো অনেকদিন থেকে শোনা যায়। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কাজ করেন কিন্তু আমাদের সঙ্গে এব্যাপারে কোন কিছু বলেননি কখনও।

মাদ্রাসার সভাপতি নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগযোগ করলে তিনি বলেন, গ্রামে মাদ্রাসা হবে এটি একটি ভালো কাজ এজন্য আমি মাদ্রাসা কমিটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। তবে নিয়োগের ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। কমিটির সভাপতি হিসেবে আমাকে না জানিয়ে অওয়াল এটি করেছে।

গোরস্থানের জমিতে মায়ের নামে মাদ্রাসা তৈরীর কারণ কী জানতে চাইলে আব্দুল আওয়াল বলেন, গোরস্থানের জমিতে আপাতত করা হবে। জমি পেলে স্খানান্তর করে নিব। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা আমার মায়ের নামে একটি মাদ্রাসা তৈরী করব আর যেহেতু টাকার ব্যবস্থা হচ্ছিল না সেজন্য আমি প্রস্তাব দেই আমার মায়ের নামে মাদ্রাসা হলে দুই লক্ষ টাকা দিব। আব্দুস সালাম স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার বাঘা প্রতিনিধি। উপজেলা প্রধান নামে যে নাম্বারটি লেখা ছিল সে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে আব্দুল আওয়ালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে সামাজিক উন্নয়নের জন্য কিছু লোক একত্র করতে বলা হয়। সেজন্য আমি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। আমার কাজে কোন ত্রুটি থাকলে আপনারা আমাকে ধরিয়ে দিন আমি সবকিছু ঠিক নেব। কে বা কারা ফোন করে লোক নিয়োগের কথা বলছে জানতে চাইলে আওয়াল কারও নাম বলতে পারেননি। কিছুকক্ষণ পর তিনটি কাগজ দেখিয়ে বলেন এখান থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। মোবাইল নাম্বার দুটিতে যোগাযোগ করলে একটি বন্ধ পাওয়া যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত।

অপর নাম্বারটি স্বদেশ প্রতিদিন প্রত্রিকার বাঘা প্রতিনিধি আবদুস সালামের। আবদুস সালাম জানান, আব্দুল আওয়াল নামের নাটোরের কোন ব্যক্তিকে আমি চিনিনা। আমার পেশার কারণে আমার নাম্বার অনেকের কাছে থাকে। এই লোক অবশ্যই কোন অসৎ উদ্দেশ্যর। তাকে ধরে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।

এব্যাপারে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্তা গ্রহণ করব। আর যেহেতু তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে চাকুরি করেন সেক্ষেত্রে তার অফিসকেও জানাব তদন্ত করার জন্য।

এ বিষয় নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সব খানেই আব্দুল আওয়ালের দূর্ণীতি নিয়ে চলছে আলোচনা।

আরও দেখুন

বিএনপির সাবেক এমপি আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ,,,,,,,,,,চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক …