নিউজ ডেস্ক:
করোনার ধকল কাটিয়ে সচল হতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতি। অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ এখন প্রায় স্বাভাবিক মানুষের ব্যক্তিগত আয়। যার প্রভাব মিলছে রাজস্ব আয়ে। যদিও অর্থবছরের শুরুর মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল এনবিআর। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি।
এনবিআরের সর্বশেষ অস্থায়ী প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী অক্টোবর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলেন, কিছুটা দেরিতে হলেও করোনা টিকাদান কার্যক্রমের গতি বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশের রাজস্ব আয়ে। এছাড়া প্রথম প্রান্তিকের শেষ ভাগে দেশের উৎপাদনমুখী শিল্প সচলসহ বড় একটা অংেশের ব্যক্তিগত আয় অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে আয়ের সঙ্গে সমহারে চাহিদা বৃদ্ধিতে বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের আমদানির পরিমাণও, যা রাজস্ব আয়ে গতি সঞ্চারে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যে দেখা যায়, রাজস্ব আহরণে সবচেয়ে ভালো করেছে পণ্য আমদানি পর্যায়ের কাস্টমস রেভিনিউ আহরণ। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ। কাস্টমস খাতে তিন মাসে আহরণ ১৯ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১হাজার ৭২৭ কোটি টাকা।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক মাস ধরেই প্রচুর পণ্য দেশে প্রবেশ করেছে। সিমেন্টের ক্লিংকার, স্টিল সামগ্রীসহ বেড়েছে মেশিনারি ও খাদ্যপণ্য আমদানির হার। এছাড়া ভালো আয় এসেছে ভ্যাট খাত থেকে। এলটিটি বা বৃহৎ করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, প্রথম তিন মাসে ভ্যাট খাতে ২৩ হাজার ৪০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব এসেছে ২১ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এখানে প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মূলত বড় প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় প্রবৃদ্ধিতে রাজস্ব সংগ্রহ বড়েছে বলে জানান ভ্যাট কর্মকর্তারা। এছাড়া ব্যক্তি শ্রেণি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উৎস খাত থেকেই করের ৮০ শতাংশ আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর। এ খাতে আয়করে প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে গত অর্থবছরে এমনিতেই স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম রাজস্ব এসেছিল। সে তুলনায় এ বছর রাজস্ব বাড়লেও তাতে তুষ্ট না হয়ে এনবিআরের অসমাপ্ত প্রকল্পগুলো দ্রম্নত শেষ করা প্রয়োজন। তার মতে, এ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফেরাটা দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো সংকেত।
তিনি বলেন এনবিআর অর্থবছরের শুরুতে আয়কর খাতে বেশি প্রবৃদ্ধি আশা করেছিল; কিন্তু অটোমেশন প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ণে ধীরগতির কারণে সফলতা আসেনি। তবে উৎসে কর কেটে রাখার সিদ্ধান্ত বেশ ইতিবাচক, যা এ খাতে রাজস্ব আহরণ অনেকটা সহজ করবে।