ভাস্কর বাগচী: দেশে করোনার কারণে অর্থনীতির চাকা থেমে গেছে। রাজস্ব আদায় প্রায় বন্ধ! এরই মাঝে আসছে নতুন বাজেট। অর্থনীতিবিদগণ বলছেন, এবার প্রবৃদ্ধি আড়াই শতাংশের বেশী হবে না। বাস্তবতাও তাই বলছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমরা কি কোন চেষ্টাই করবনা। দেশে এখন প্রধানমন্ত্রীর অধিনায়কত্বে অর্থনৈতিক মুক্তিযুদ্ধ চলছে! জাতীয় রাজস্ব বোর্ডই আমাদের প্রধান অস্ত্রাগার। করোনা আমাদের দমায়ে রাখতে পারবে না, যেমন পারেনি ফাঁকিস্হান আর তার দোসররা। আমাদের অপ্রয়োনীয় ব্যয় সংকোচন করতে হবে। বকেয়া বড় রাজস্ব আদায় করতে হবে যেকোন মুল্যে! কালো টাকা বা অপ্রর্দশিত অর্থ আমাদের মুল স্রোতে আনতেই হবে। হাল সনে সরকার জমি ফ্লাটে ঐ টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছিল। এবার যদি তার সথে সঞ্চয়পত্রকেও শতকরা ৫-১০% হারে সরল জরিমানায় বৈধ করা সুযোগ দেওয়া যায়, বিপুল রাজস্ব আহরণ হবে। অনেকে বলবেন এতে সরকারের বিপুল সুদ টানতে হবে কিন্তু বৈদেশিক বা ব্যাংকখাত থেকে ঋণ নিলেও সরকার কে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। হাঁ, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ব্যাংকের বা বৈদেশিক থেকে একটু বেশী কিন্তু ঐ সুদগুলো যায় এলিটদের পকেটে, কিন্তু সঞ্চয়পত্রের সুদ যায় সামাজিক নিরাপত্তার জীবন ধারণে।অধিকন্তু তা অভ্যন্তরীন উৎস। তাই সঞ্চয়পত্র কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দিলে সরকারেরই এই মহামারিকালে বেশী লাভ। আবার সরকারের ও জনগণের প্রতি এই মহামরী কালে মানবিক পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্বটা বেশ জোরেসরেই হয়ে যায়। আর সঞ্চয়পত্রে যেহেতু বিপুল কালোটাকা ঢুকেই আছে এবং সরকারকে তার সুদ টানতেই হচ্ছে তাই তার বৈধতা দিয়ে সচ্ছতা আনলে সংকটকালে রাজস্ব আর প্রবৃদ্ধির সোনার হরিণ ধরা গেলে দেশের স্বার্থে একটু অনৈতিকতাকে প্রশয় দিলে কি খুব অন্যায় হবে? আসন্ন বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে আদায়ের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছেন বৈধতা ব্যতীত তা আদায় সম্ভব নয়। কারণ হাল সনেরও যে টার্গেট ছিল তা আদায় হয়নি এই কারনেই। সরকার সোনা চাঁদি বৈধতা দিয়ে গত বছর একটা মোটাদাগে রাজস্ব পেয়েছিল। তাই সংশ্লিষ্টদের সঞ্চয়পত্রের বিষয়ে দেশের এ মহামারী কাল বিবেচনা করে ও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যহত তথা দেশে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ রাখছি।
লেখক- সহ-সভাপতি, কর আইনজীবী সমিতি, নাটোর