বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিটেন্সের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। সচিবালয়ে অর্থনৈতিক ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই তথ্য জানানো হয়। দেশে বৈধ উপায়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের (প্রবাসী আয়) ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া শুরু হয়েছে। এটি ১ জুলাই ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানান, ‘রেমিটেন্স বৈধ পথে আনার জন্য একটি প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছিলাম। ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। এখন কেউ ব্যাংকে রেমিটেন্স পাঠালে ২ শতাংশ প্রণোদনা পাবে। যারা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন, তাদের অবহিত করতে চাই, তারা আগের পাওনা (১ জুলাই থেকে দিয়ে আসা রেমিটেন্সের ওপর) প্রণোদনাও হারাবেন না।’
এখন থেকে ১৫০০ ডলার পর্যন্ত রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন করা হবে না। এর বেশি হলেই কাগজ দিতে হবে। প্রতি লেনদেন ১৫০০ ডলারের মধ্যে থাকলে দিনে যতবার ইচ্ছা করতে পারবে। প্রতি লেনদেনের জন্য ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবে। ফলে রেমিটেন্স এবার ১৮-২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা যায়।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবপক্ষ দেশে নিবিড়ভাবে রেমিটেন্স প্রেরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদেও বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোকে আরও উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকার রেমিটেন্স প্রেরণের বিপরীতে ২ (দুই) শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৬ আগস্ট, ২০১৯ সার্কুলার নং-৩১ এর মাধ্যমে ‘বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের নীতিমালা’ জারি করে। জারিকৃত নীতিমালায় ব্যাংকসমূহকে অগ্রিম আকারে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ফান্ড প্রদান করার বিধান রয়েছে। এ প্রণোদনা ১ জুলাই ২০১৯ থেকে পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর কার্যকর হবে।
নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য অনুচ্ছেদগুলো হলো-বিদেশ থেকে পাঠানো প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক প্রযোজ্য বিনিময় হারে টাকায় রূপান্তরিত অর্থ প্রচলিত বিধিবিধান পরিপালন করা উপকারভোগীর হিসাবে জমা/উপকারভোগীকে প্রদানের সময় উক্ত অর্থের ওপর ২ (দুই) শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করবে; বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশী এক্সচেঞ্জ হাউজ/ব্যাংকের মাধ্যমে আলোচ্য অর্থ প্রত্যাবাসিত হতে হবে; একজন প্রবাসীর রেমিটেন্সের ওপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ মার্কিন ডলার ১৫০০ (এক হাজার পাঁচশত)/ সমমূল্যের অর্থের জন্য উল্লেখিত হারে কোন প্রকার কাগজপত্র ব্যতিরেকে প্রণোদনা সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখিত পরিমাণের বেশি লেনদেনের প্রাপককে রেমিটেন্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (যেমন: পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশী নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি/বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি) রেমিটেন্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখিল সাপেক্ষে নগদ সহায়তা দেয়া যাবে; বিধিবহির্ভূতভাবে প্রণোদনা/নগদ সহায়তার নামে অর্থ প্রদান করলে প্রদত্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করা হবে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখিত শর্ত মোতাবেক প্রাপক কর্তৃক রেমিটেন্স গ্রহণের দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করা সম্ভব না হলে পরবর্তী ১৫ (পনেরো) কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে রেমিটেন্স প্রদানকারী ব্যাংক তাকে প্রাপ্য নগদ সহায়তা দেবে।