নিউজ ডেস্ক:
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘জ্বালানি ইস্যুতে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশটির যদি উদ্বৃত্ত জ্বালানি থাকে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সহযোগিতার বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার জন্য চেষ্টা করবে।’
আগামী মাসের শুরুতে ভারত সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বর্তমানে ভারত জ্বালানি খাতে আমাদের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আমরা তাদের সহায়তা চাইব, কেন না আমরা একটু নাজুক আছি। তাই তাদের উদ্বৃত্ত থাকলে তাদের কাছ থেকে জ্বালানি আনার জন্য চুক্তি করতে চায় ঢাকা।’
সচিব বলেন, ‘জ্বালানি ইস্যুতে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশটির যদি উদ্বৃত্ত জ্বালানি থাকে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সহযোগিতার বিষয়ে দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তি করার জন্য চেষ্টা করবে।’
তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশের। এটা নির্ভর করবে ভারতের উদ্বৃত্ত জ্বালানির পরিমাণের ওপর।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমরা পার্শ্ববর্তী দেশ বা প্রতিবেশী দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা আশা করছি এ ব্যাপারেও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে।’
নেপাল থেকে ভারতের গ্রিড ব্যবহার করে জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে চুক্তি এখন হচ্ছে না। তবে সেই অপশনটাও আমাদের আছে। সুতরাং সবগুলো অপশন আমরা চালু রাখতে চাই। পানিবিদ্যুৎ বা ত্রিপুরাসহ ভারতের পূর্বাঞ্চলে যে সমস্ত রাজ্য আছে, সেগুলোতে যদি তাদের উদ্বৃত্ত, থাকে তাহলে আমরা ব্যবস্থা করতে পারি।’
মাসুদ বিন মোমেন জানান, এর জন্য যে গ্রিড বা কানেক্টিভিটি প্রয়োজন হবে, তা সময়সাপেক্ষ। রাজনৈতিক বোঝাপড়া থাকলেও প্রস্তুতির জন্য সময় লাগবে।
প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফরে তিস্তা তুলবে ঢাকা
বঙ্গবন্ধুকন্যার ভারত সফরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যু তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা একবার সিন করা হয়েছিল। সুতরাং আমরাতো অবশ্যই চাইব তারা (ভারত) তাদের ফর্মালিটিগুলো শেষ করে এটা ঘোষণা করবে। প্রত্যাশা আমাদের সব সময় থাকবে। সুতরাং আমরাও তুলব বিষয়টা।’
চার দিনের সফরে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি যাবেন শেখ হাসিনা। সফরে আলোচনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এটা একটা রাষ্ট্রীয় সফর। এটা দুইটা বন্ধু দেশের মধ্যে সবসময় হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এটা আমাদের দিক থেকে একটা ভিজিট। দুই দেশের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক আছে, সেটার বিভিন্ন ইস্যুগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আগে যেসব বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। যেগুলোতে অগ্রগতি হয়েছে, সেগুলোও আমরা মূল্যায়ন করে দেখব এবং সামনে আরও কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা হতে পারে, সে বিষয়টাও আমরা দেখব। সুতরাং সেই অর্থে কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা আছে এমন নয়। সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমরা বছরে একবার বসলে সব বিষয়ে আলোচনা করি।’
গঙ্গা ও প্রতিরক্ষা নিয়েও আলোচনা হবে
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে গঙ্গার পানি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেন, ‘এবার গঙ্গা নিয়ে আলোচনা হবে নিশ্চয়ই। এমনিতে গঙ্গার ইস্যুটা রেইসজড হয়েছিল। সুতরাং এখন দুই পক্ষ টেকনিক্যাল লেভেলে আলাপ-আলোচনা করবে, এরকমই আমার ধারণা।’
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা ইস্যুতে যে এলওসি (লেটার অফ ক্রেডিট) আছে, সেটার ব্যাপারে অনেক দিন ধরে সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে মোটামুটি আমাদের টিম ওখানে গেছেন, তারা দেখে এসেছেন। সুতরাং এখন পর্যন্ত ফরওয়ার্ড মুভমেন্ট আমরা পাইনি।’