নিউজ ডেস্ক:
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছেন। তার নির্দেশনায় বিদেশগামী কর্মীদের দ্রুত ও সহজ উপায়ে কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের লক্ষ্যে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই কুয়েত ও সৌদি প্রবাসী কর্মীদের টিকা কার্যক্রমের সমস্যা শেষ হবে। সব বিদেশগামী কর্মী পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আসবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সোমবার (৫ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে প্রবাসী কর্মীদের টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে বিশেষ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার সবসময় প্রবাসী কর্মীদের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের যেকোনো সমস্যায় সরকারের বিভিন্ন দফতর যৌথভাবে সমাধান করে। এরই অংশ হিসেবে কোভিড মহামারি পরিস্থিতিতে বিদেশগামী কর্মীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের লক্ষ্যে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়েছে।
বিদেশগামী কর্মীদের করোনা টিকা পেতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিবন্ধন আবশ্যক উল্লেখ করে ইমরান আহমেদ বলেন, বর্তমানে টিকা গ্রহণের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের লক্ষ্যে বিএমইটির ডাটাবেজে কর্মীদের নিবন্ধন চলছে। সুরক্ষা অ্যাপে সাধারণভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু বিদেশগামী কর্মীদের সুবিধার্থে তাদের বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে বয়স নির্বিশেষে এই অ্যাপে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এ জন্যই কর্মীদের আগে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধিত হতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের সব জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস (ডিইএমও) ও নির্ধারিত নয়টি টিটিসি এবং একটি আইএমটির পাশাপাশি ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটির নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান।
‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশগামী কর্মীরা খুব সহজেই বিএমইটিতে নিবন্ধন করতে পারছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের বিএমইটি’র নিবন্ধনের সুবিধার্থে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় তিনটি সাব-সেন্টার খোলা হয়েছে। সাব-সেন্টারগুলো হলো- সাভার, ধামরাই ও মিরপুর এলাকার জন্য বাংলাদেশ-কোরিয়া টিটিসি-মিরপুর; দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরাণীগঞ্জ এলাকার জন্য কেরাণীগঞ্জ টিটিসি এবং গাজীপুর এলাকার জন্য গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন. এম জিয়াউল আলম। এতে আরও বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
ইমরান আহমদ বলেন, বিএমইটির ডাটাবেজ ও সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধিত কর্মীদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে সৌদি আরব ও কুয়েতগামী কর্মীদের ফাইজার টিকা প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে যাওয়া কর্মীদের প্রযোজ্য অন্যান্য টিকা প্রদান করা হবে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধিত কর্মীরা তাদের ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট প্রদর্শন করে অ্যাপের নির্দেশিত তারিখ ও স্থানে টিকা গ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বদা দেশের ১৭ কোটি মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এ মহামারিকালে তাদেরকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী কর্মীদের অবদানকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাদের প্রেরিত রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান করছেন। বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে বিদেশগামী কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রয়োজনে ডিজিটাল প্লাটফর্মে কাজ করতে হবে।