সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / উন্নয়ন বার্তা / প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী রুবিনা

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী রুবিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রুবিনা বেগম। বয়স ৩৬। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় এলাকায় রুবি পাগলি নামেই পরিচিত তিনি। বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মধ্যমপাড়ায়। ১৫ বছর আগে রুবির বিয়ে হয়েছে। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় তাকে ফেলে বিদেশ চলে যায় স্বামী। রুবিনার ঠাঁই হয় গরীব অসহায় বাবার সংসারেই। কিন্তু বাবা আব্দুল ওয়াহেদও মারা যান কয়েক মাস আগে। তার একমাত্র ছোট ভাই আশরাফুল আলমও শারিরিক প্রতিবন্ধী। কোনোমতে দিন এনে দিন খায় দুই ভাই-বোন।

একমাত্র ছোট ভাইকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন বাবার রেখে যাওয়া জরাজীর্ণ মাটির ঘরে। বর্ষার পানিতে ধুঁয়ে গেছে সেই ঘরটির দেওয়াল। রান্নার একমাত্র ছোট্ট ঘরটিও ভেঙ্গে গেছে কয়েকদিন আগে। বৃষ্টির দিনে ভাঙা টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ তাদের থাকার ওই ঘরটিতে। বসবাস অযোগ্য ঘরটি মেরামত বা নতুন ঘর তৈরীর টাকা নেই তাদের। তাইতো গ্রামে নতুন মানুষ দেখলেই এগিয়ে আসেন রুবিনা। হাত পাতেন সাহায্যের। সম্প্রতি এক সাংবাদিককে দেখে রুবিনা এগিয়ে এসে বলেন, তোরা কি সরকারি লোক বাহে? তোরা কি এটা (একটা) বাড়ি দিবার পারো হামাক? এ জগতে মোর কেউ নাই। সরকারকে কইয়্যা মোক এটা বাড়ি দে বাহে।

রুবিনার এই দুর্দশার কথা উঠে আসে গণমাধ্যমে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আসে। দুঃস্থ ও দরিদ্র মানুষকে ঘর নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে তাৎক্ষনিক রুবিনার জন্য ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সূত্রে জানা যায়, সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্পে ‘আবাসিক ভবন নির্মাণ’ খাতের আওতায় রুবিনা ও আশরাফুলকে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত ডিজাইন অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে বাড়িটি নির্মাণেও নির্দেশ দেয়া। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে মুজিববর্ষের মধ্যে সকল গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। দিনাজপুরের মানসিক প্রতিবন্ধী রুবিনার জন্যও ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণে ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুততম সময়ে তার জন্য ঘরটি নির্মাণ করে দেয়া হবে।

‘আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগানে মুজিববর্ষের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে আশ্রয়ণে ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৯৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঘর নির্মাণ করে ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৩৬টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হলে বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন। সকল গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তখন থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৪০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৪৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন-অসহায়-ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়াও ২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫৬ জনকে আয়বর্ধক পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৮টি পরিবারকে ঋণও দেয়া হয়েছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্প গ্রামে ফলদ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণ করা হয়ে থাকে। ২১ লাখের বেশি বৃক্ষরোপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্প গ্রামে বসবাসরত উপকারভোগীদের জীবনমান সহজীকরণের জন্য বিদ্যু সংযোগ দেয়া, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়ে ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রতিটি এলাকা থেকে গৃহহীনদের খুঁজে খুঁজে বের করে ঘর করে দেয়া হচ্ছে। আশ্রায়ন প্রকল্প ছাড়াও গৃহহীনদের আবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তহবিলসহ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে সরকার।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …