নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সারা দেশে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, দেশের সব ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল ৯টা থেকে সারা দিন দুই পালায় টিকাদান কার্যক্রম চলবে। এতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তাদের, যারা নিবন্ধন করে টিকার জন্য অপেক্ষায় আছে।
গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানিয়েছেন। করোনা মহামারি ঠেকাতে চলমান টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি এই বিশেষ কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এর আগেও ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করেছিলাম। এবারও ২৮ তারিখে এই ক্যাম্পেইন চলবে। এদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন। সে জন্য এদিন ক্যাম্পেইন করছি।’ তিনি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন যে ছয় লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে, তা-ও চলবে। গ্রামগঞ্জে টিকা দেওয়া হচ্ছে। যারা দূরে থাকে, দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বয়স্ক এবং যারা সব সময় টিকা নিতে আসতে পারে না, তাদের টিকার আওতায় আনাই উদ্দেশ্য।
বিশেষ এই কার্যক্রমের আওতায় কারা টিকা পাবে—জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে যারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে তারা। তবে ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে নারী-পুরুষ, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দুর্গম এলাকার বাসিন্দারা অগ্রাধিকার পাবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এলেও এই ক্যাম্পেইনে টিকা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, দেশের চার হাজার ৬০০ ইউনিয়ন পরিষদ, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা, সিটি করপোরেশনের ৪৪৩টি ওয়ার্ডে টিকা দিতে ৩২ হাজার ৪০৬ জন সরকারি ও ৪৮ হাজার ৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত করা হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, এই টিকাদান কর্মসূচির জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি বুথ, পৌরসভায় একটি করে এবং সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডে তিনটি করে বুথ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ মিডিয়াকর্মীদের কাছে বিশেষ সহযোগিতার অনুরোধ জানান।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশে মাত্র একটি টেস্টিং ল্যাব ছিল। এখন ৮২০টি টেস্টিং ল্যাব হয়েছে, ১৭ হাজার কভিড বেড করা হয়েছে, যার ৮৫ শতাংশই এখন খালি হয়ে গেছে। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতের সফলতার কারণেই দেশে অর্থনীতি সচল রয়েছে, স্কুল-কলেজ খোলা সম্ভব হয়েছে, অফিস-আদালত চলছে। করোনা দেশ থেকে নির্মূল করতে সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। সবাইকে একযোগে একসঙ্গে কাজ করেই দেশ থেকে করোনা নির্মূল করতে হবে।’
দেশে টিকা উৎপাদনে অগ্রগতির বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো আশা করছি, যেই কম্পানি দায়িত্ব নিয়েছে, তারা সেই দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতি সঠিক সময়ে পালন করবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত শনিবার পর্যন্ত দুই কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজারের বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে এক কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সোিব্রনা ফ্লোরা যুক্ত ছিলেন।