নিউজ ডেস্ক:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জলবায়ু তহবিল হতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রাজশাহী বিভাগের জন্য বরাদ্দ চেয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পুনঃনির্বাচিত মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) গণভবনে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই দাবি জানান রাসিক মেয়র। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা লক্ষ্য করেছি গতকাল আপনি বলেছেন যে, জলবায়ু তহবিলের যে প্রকল্পগুলো তৈরি হয়, সেগুলো ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ কে মাথায় রেখে যেন করা হয় এবং সুন্দরবন এলাকাটি অগ্রাধিকার পাবে। একই সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, রাজশাহী জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। প্রচণ্ড গরম, পানির লেয়ার নিচে নেমে গেছে, পানি আর্সেনিক যুক্ত এবং পদ্মা নদীর পানি তো কমে গেছে, আপনি নিজেও জানেন। ফলে রাজশাহীতে খরার কারণে মানুষ খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা রাজশাহী বিভাগ জলবায়ু তহবিল থেকে কিছু বরাদ্দ পাই, একটু বিবেচনা করবেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে যে স্থানীয় সরকার চালু করেছিলেন। সেটি জিয়াউর রহমান নামক একজন অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী এসে সবকিছু উল্টাপাল্টা করে দিয়েছে, এরশাদও তার পথ অনুসরণ করেছে। আপনি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি ১৯৯৮ সালে পুনরায় এই উপজেলা পদ্ধতিকে চালু করেছেন। ২০১৭ সালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনের মাধ্যমে দিয়েছেন। আপনার কারণে আজকে সারা বাংলাদেশে স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকান্ডগুলোতে অনেক গতিবেগ সঞ্চারিত হয়েছে। কিছু সমস্যা থাকবে, তবে সেগুলো সময়ের বিবর্তনে কেটে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আপনি যখন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু করেন মাত্র তিনশ টাকা, তখন অনেকে নাক সিটকে ছিল। এখন আপনি সেটাকে বাড়িয়ে কুঁড়ি হাজার টাকায় নিয়ে গেছেন এবং ২৫ হাজার টাকা উন্নীত হবে বলে আমরা জানতে পারছি। এই রকম অসংখ্য ভাতা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সুরক্ষিত রেখেছেন, আগলে রেখেছেন বড় বোনের মতো, মায়ের মতো।
রাসিক মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশে নয়, দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্ব দরবারে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পৌছে গেছেন। তার প্রমাণ আমরা গত কয়েকদিন আগে দিল্লিতে দেখেছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সামনে পুরো বাংলাদেশ আছে। দেশের সকল সংসদ সদস্য, মেয়র, জেলার পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র সহ স্থানীয় সরকারের সকল জনপ্রতিনিধি প্রত্যেককে জনগণ থেকে নির্বাচিত হয়ে যখন এখানে এসেছেন, তাহলে পুরো বাংলাদেশটি আমাদের সামনে আছে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দারুণ একটি উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রীর কথাগুলো একসঙ্গে সারাদেশে পৌছে যাবে ইনশাল্লাহ।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অজর্নগুলো তুলে ধরে রাসিক মেয়র বলেন, আমরা দুইবার আপনার কাছ থেকে জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছি। পরপর দশবার ইপিআই কার্যক্রমে দেশসেরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে দুইবার দেশসেরা হয়েছি। ঢাকা সিটির মতো এতো আয় আমাদের নাই। যে স্বল্প আয় হয়, তাতে বেতন-ভাতা দিতে পারি। তারপরও কিছু টাকা আমাদের সঞ্চয় থাকে। এটাকে আরো সবল করতে চাই। সেই কারণে কিছু জায়গা জমি যদি জেলা প্রশাসকগণকে আপনি বলে দেন, যেগুলোর আমরা মালিকানা নিব না, শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্ক ও খেলার মাঠ করে দেব।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহী সহ সারাদেশের উপজেলাগুলো, যেগুলো এখন শহর হয়ে উঠছে, এখন থেকে সেখানে পরিকল্পনাগুলো ইমপোস করে দেন, তাহলে খুব ভালো হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলার কিছু নাই। আপনি সবই বুঝেন, সবই করেন আমি আপনার সুস্থ্যতা কামনা করি, আপনি বাংলাশের মানুষের কল্যানে আরো অনেক কাজ করে যান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু মাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব সহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদ ও জাতীয় চার নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, সকল সংসদ সদস্য, সারাদেশ থেকে আগত সিটি কর্পোরেশন মেয়র, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরগণসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।