নিউজ ডেস্ক:
সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরণ করা হবে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ অডিটোরিয়ামে ডিএনসিসির আয়োজনে ‘মহান বিজয় দিবস-২০২২’ উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সেবা প্রদানে ডিএনসিসি সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। আমরা ডিএনসিসি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছি। তাদের সম্মানে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিটি ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়ক হবে। সিটি করপোরেশনের অফিসে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ থাকবে এবং আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। সেবা নিতে এলে তারা সেই কক্ষে বসবেন। এছাড়া ডিএনসিসির কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ দাফনে কোনও ফি লাগবে না।’
মেয়র আতিক আরও বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। আজ উপস্থিত আছেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা, উপস্থিত আছেন মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র রক্তের উত্তরাধিকারী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। আমাদের সবাই মিলে দেশটা গড়ে তুলতে হবে।’
দখলের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেন, ‘জাতির পিতা যেমন করে দেশকে ভালোবেসেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেমন করে দেশকে ভালোবেসেছেন, ঠিক তেমন করে আমাদের দেশকে এবং এই শহরকে ভালোবাসতে হবে। আমরা দেখছি— অনেকে খাল, মাঠ, রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে। দখল-দূষণ বন্ধ করতে হবে। যাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে, তারা কখনও অবৈধ দখল করতে পারে না। সুন্দর শহর গড়ে তুলতে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মীর জাফরের বংশধররা এখনও বেঁচে রয়েছে। যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব ও দেশ স্বাধীন করার অবদান স্বীকার করে না। সেজন্য তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধারা যতদিন বেঁচে আছি সবাই একসঙ্গে থাকবো। একসঙ্গে চলবো। আমরা সবসময় দেশের বিজয়ের কথা বলবো। আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছি, তখন আমাদের কাছে হাতিয়ার ছিল না। একটি জিনিস ছিল, একটি স্লোগান ছিল, জয় বাংলা। আমাদের একটি দাবি ছিল, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগানে পরিণত করা হোক। আজকে সেটা জাতীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা তার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে সবকিছুতেই ঋণী।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনা ও স্মৃতি তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ মোট ১২শ’ জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা শেষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।