নিউজ ডেস্ক:
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের জন্য আলাদা সিটি করপোরেশন করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। প্রকল্প এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঢাকা উত্তর বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী নতুন একটি সিটি করপোরেশন গঠনের প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে তারা।
নতুন সিটি করপোরেশন হওয়ার আগপর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ে পূর্বাচলের রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি নিজস্ব সাংগঠনিক কাঠামোর অধীনে বাস্তবায়ন করতে চায় রাজউক। এই প্রস্তাব গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য রাজউক বোর্ডে বিবেচনাধীন আছে। আজ মঙ্গলবার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রাজউক এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাজধানীতে জনসংখ্যার চাপ কমাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের ৬ হাজার ১৫০ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠছে পূর্বাচল নতুন শহর। এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। পরে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে রাজউকের নিজস্ব অর্থায়নে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে নাগরিকদের আধুনিক সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করতে আলাদা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা স্বতন্ত্র বডি তৈরি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছিল সংসদীয় কমিটি। মঙ্গলবারের বৈঠকে রাজউক এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে বলা হয়, আইন অনুযায়ী রাজউক নির্মিত যেকোনো অবকাঠামো সিটি করপোরেশন বরাবর হস্তান্তরের বিধান আছে। কিন্তু পূর্বাচল প্রকল্প এলাকাটি সিটি করপোরেশনের আওতাধীন না হওয়ায় মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তা হস্তান্তর করা যাবে না। এ কারণে প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এতে প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ বা পৌরসভা গঠন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজউক। প্রস্তাবটি গত বছরের ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় গত ফেব্রুয়ারিতে স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ গঠনের যৌক্তিকতাসহ আবার প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। এখন রাজউক আলাদা একটি সিটি করপোরেশন গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিষ্কার রাখার সুপারিশ
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বৈঠকে তিনি জানান, কাগজে–কলমে চট্টগ্রাম সিটিতে ৫৬টি খাল আছে। কিন্তু বাস্তবে আছে ৩৬টি। চাক্তাই ও চশমা খালসহ নগরের খালগুলোতে দখল ও আবর্জনার কারণে জলাবদ্ধতা হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এগুলো নিয়ে কাজ করছে। এরপর তারা এগুলো সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেবে। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেক অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও সুফল আসছে না। খালগুলো খনন করার পর এগুলো নিয়মিত দেখভাল করতে হবে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খালগুলো পরিষ্কার রাখতে জনসচেতনতার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে সমন্বয় করে কাজ করার সুপারিশ করে কমিটি। এতে আরও বলা হয়, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত সুরক্ষায় হোটেলগুলোর বর্জ্য ও হ্যাচারিগুলো দূষিত পানি পরিশোধনের জন্য স্থায়ী এসটিপি করার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের করার সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ও ফরিদা খানম বৈঠকে অংশ নেন