নিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘ একযুগের চেষ্টার পর অবশেষে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলের স্থায়ী কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামীকাল রবিবার চীনা কর্তৃপক্ষ ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ নামে কমপ্লেক্সটি সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর দিন আগামী ১৭ মার্চ বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার স্থায়ী কমপ্লেক্সে মেলার ২৬তম আসর আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি।
জানা গেছে, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠানের স্থায়ী কমপ্লেক্স হওয়ায় দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো বাংলাদেশের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পরই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা স্থায়ী কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে এই প্রকল্পের সহযোগিতার হাত বাড়ায় চীন। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে অবশেষে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্বাচল নতুন শহরে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কমপ্লেক্স হওয়া আরেকটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন।
গত ২৫ বছর ধরে রাজধানীর ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগরে প্রতিবছরের ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি মাসব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। এতে করে সেই সময় ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়ে পুরো ঢাকা শহর চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ত। এছাড়া ব্যবসায়ীদের প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্যাভিলিয়ন ও স্টোর নির্মাণ করতে হতো। অস্থায়ী কমপ্লেক্স হওয়ায় সেখানে বছরের অন্য কোন সময় পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন বা বিক্রি করা সম্ভব হতো না। কিন্তু স্থায়ী কমপ্লেক্স হওয়ায় এসব সমস্যা দূর হবে বলে মনে করা হচ্ছে। দর্শনার্থী ও ক্রেতারাও এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরতে পারবেন। এজন্য মেলাকালীন সময়ে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ক থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত যাওয়ার বিশেষ পরিবহন সার্ভিস চালু করার চিন্তাভাবনা করে রেখেছে ইপিবি।
জানা গেছে, চীনা কর্তৃপক্ষ এক্সিবিশন সেন্টারটি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছে হস্তান্তর করার যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে-আগামী রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন জনকণ্ঠকে বলেন, বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কমপ্লেক্স পাওয়া বর্তমান সরকারের আরেকটি বড় অর্জন। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার পাশাপাশি সারাবছরই এখন কমপ্লেক্সে মেলা করা যেতে পারে। দেশী-বিদেশী যে কোন প্রতিষ্ঠান বা উদ্যোক্তারা যাতে তাদের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এখানে যে কোন সময় মেলার আয়োজন করতে পারেন সে ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হবে। তিনি বলেন, এটি দেশের জন্য গর্বের, আমাদের একটি স্থায়ী কমপ্লেক্স হয়েছে।
স্থায়ী কমপ্লেক্স পুরোপুরি প্রস্তুত ॥ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৬তম আসর আয়োজনের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত পূর্বাচলে নির্মিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারটি। রাজউকের নতুন শহর পূর্বাচলে ২০ একর জমির ওপর নির্মিত এক্সিবিশন সেন্টারে রয়েছে দুটি বড় হলরুম। এখানেই বসবে ৯ বর্গফুট আয়তনের ৮০০টি স্টল। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলে আগামী ১৭ মার্চ শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এটির অবস্থান শেরেবাংলা নগর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে।