নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চুর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে জিডি করেছেন উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ওই কর্মকর্তা ঘুষ ছাড়া কোন ফাইল ছাড়েন না। এর আগেও উপজেলার সব জনপ্রতিনিধি তাকে উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে বয়কট ঘোষণা করেছিলো। কিন্তু এতো কিছুর পরও তিনি নিজেকে সংশোধন না করায় ফোন করে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।’
পুঠিয়া থানায় করা জিডিতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ উল্লেখ করেছেন, গত রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তিনি নিজ কর্মস্থলে ছিলেন। ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান তার নিজস্ব ০১৭১২-৬৪৮৪৩২ নম্বর ফোন করে আবুল কালাম আজাদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে আমাকে খুন জখম করার হুমকি দেন। এ সময় তাকে কর্মস্থলে চাকরি করতে দেবেন না বলেও ভয়ভীতি দেখান। এ ঘটনায় ওইদিনই তিনি পুঠিয়া থানায় জিডি করেন।
আবুল কালাম আজাদ জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান যখন তাকে হুমকি দেয় তখন তার চেম্বারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক প্রতিনিধিদের কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পর তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু বলেন, ‘আমি কী খুনি যে তাকে হত্যার হুমকি দেব? ওই কর্মকর্তা একজন ঘুষখোর। শিক্ষকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারি ও জনপ্রতিনিধিরা তার কাছে জিম্মি। টাকা ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হন। আবার ঘুষ দিলে কাজ হয়। ঘটনার দিন বিল নেয়ার জন্য একজন ইউপি সদস্য তার কাছে গিয়েছিলেন। তাকে বিল না দিয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। আমি তার কাছে মোবাইল করলে তিনি বলেন কে বলছেন? আপনারাই বলুন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম্বার থাকে না? এ জন্য তাকে সতর্ক করেছি।’
তিনি আরো বলেন, এই কর্মকর্তা সবার সঙ্গেই খারাপ আচরণ করেছেন। এজন্য সমন্বয় কমিটি থেকে তাকে বয়কট ঘোষণা করা হয়। পরে স্থানীয় এমপি ডা. মনসুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে তিনি আর কখনোই এমন আচরণ করবেন না বলে ক্ষমা চান। এরপর সমন্বয় সভা হয়। কিন্তু এরপরও তিনি সংশোধন হননি।
পুঠিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী বলেন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার জিডি গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।