নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া (রাজশাহী):
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসন ও পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা থাকলেও চলমান লকডাউন ও বিধিনিষেধ মানছে না এলাকার বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকী দিয়ে চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বেচাকেনা। অনেকেই আবার দোকানের হাফ সাঁটার খুলে বিক্রয় করছে জিনিসপত্র।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বানেশ্বর বাজার, মোল্লাপাড়া ও ঝলমলিয়া হাট, পৌর সদরের কাউন্সিল বাজারসহ অন্যান্য বাজার গুলোতে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। বিভিন্ন দোকানপাট, কাঁচাবাজার, ফার্মেসীসহ মাছ বাজার গুলোতে মানছে না কেউই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরুত্ব। বাজারে আসা বেশিরভাগ মানুষের মুখে ছিল না মাস্ক। মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে একজন বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। বেশি ভিড় দেখলেই পড়বেন। এভাবেই ঢিলেঢালাভাবেই পার হলো ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউনের আজ নবম দিন।
শনিবার সকালে দেখা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা ও বিধি নিষেধ মেনে চলার জন্য মাইকিং করছে উপজেলা প্রশাসন, পুঠিয়া থানা ও শিবপুর হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কসহ উপজেলার একাধিক স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যানবাহন থামিয়ে চলছে পুলিশের তল্লাশি। প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেলেও সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মটর সাইকেল, রিকশা-ভ্যানসহ সব ধরনের যানবাহন ও মাস্ক বিহীন সাধারণ মানুষের চলাচল দেখা গেছে।
এসময় কাউন্সিল বাজারে বাজার করতে আসা জনি সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কয়দিন ঘরে বসে থাকব। মাস্ক কিনতেও টাকা লাগে। বাহিরে বের হয়ে কাজ না করলে সেগুলোও কিনব কেমনে।
অটোবাইক চালক সুমন, ফিরোজ, ফজেলসহ আরো অনেকেই বলেন, প্রতিদিন অটো ভাড়া দিতে হয়। ঘরে বউ বাচ্চা আছে গাড়ি না চালালে ভাড়া ও খাবো কি। আমরা তো এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহায়তা পাইনি।
এদিকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী চলমান কঠোর লকডাউন কার্যকর করাসহ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে স্থানীয় প্রশাসন সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ্ পিএএ সহ আরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, করোনা সংক্রমণের হার বর্তমানে উদ্বেগজনক। কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানা না গেলে সংক্রমণের হার কমবে না। মহামারির এই দুঃসময়ে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, করোনাকালীন সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নির্দেশনায় কঠোর লকডাউন চলছে। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা মাঠে রয়েছি। পথচারী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান ব্যবসায়ীদের আইন মেনে চলার জন্য মাইকিং করার পাশাপাশি মাস্ক ছাড়া জরুরী কাজে যেসব মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছেন তাদের মাস্কও পড়িয়ে দিচ্ছেন পুঠিয়া থানা পুলিশ সদস্যরা।