নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া (রাজশাহী):
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজশাহীর পুঠিয়া সদরের রাজপরগণায় বহিরাগত হাজারও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে দেখা যায়নি। অনেককেই মাস্ক পড়তেও দেখা যায়নি। এতে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ছে। স্থানীয় কয়েকজন বলেন পুলিশ-প্রশাসনের তদারকির না থাকায় রাজবাড়ীতে এতো মানুষের সমাগম ঘটেছে। শুক্রবার (১৪ মে) বিকালে পাঁচআনী রাজবাড়ী মাঠ ও আশেপাশের রাজপরগণায় এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী জেলা নাটোর ও পাবনা থেকে অনেক পর্যটক ঘুরতে এসেছেন পুঠিয়া রাজবাড়িতে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, নসিমন, করিমন বোঝাই করে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু কিশোর দর্শনাথীরা আসতে শুরু করেন। বিকেল গড়াতেই বাড়তে শুরু করে দর্শনার্থীর সংখ্যা। একপর্যায়ে উপচেপড়া দর্শনাথীতে রাজপরগণা পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
নাটোর জেলার লালপুর সদর এলাকার মনিরুজ্জামান বলেন, উত্তর অঞ্চলের মধ্যে পুঠিয়া রাজপরগণা অসাধারণ। এখানে কারুকাজ সম্মিলিত রাজ রাজাদের প্রসাদ, অনেক মন্দির রয়েছে। তাছাড়া এই পরগনা দেখতে কোনো টাকা দিতে হয় না। তাই প্রতিবছর ঈদের মধ্যে আমরা পরিবার অথবা বন্ধুরা মিলে বেড়াতে আসি। করোনাকালীন বর্তমান সময়ে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেনো এসেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঈদের সময় এসব নিষেধাজ্ঞা কেউ মানছে দেখেছেন?
অপর এক আগত দর্শনাথী পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার মীর কাজল বলেন, আমি একটি বেসরকারি চাকুরি করি। বছরে একবার ঈদুল ফিতরের সময় বন্ধুরা মিলে একটু ঘুরাফিরা করি। করোনার কারণে গত এক বছর কোথাও ঘুরতে যেতে পারিনি। যদিও এখনও একই অবস্থা কিন্তু মনকে একটু রিফ্রেশমেন্ট করতে নিজস্ব গাড়িতে বেড়াতে এসেছি।
রাজপরগনা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, আজ ঈদের দিন রাজবাড়িতে যত লোকজন এসেছে তা গত এক বছরেও আসেনি। এর পেছনে নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ-প্রশাসনের গাফলতি রয়েছে। তার মধ্যে আগত বেশীর ভাগ লোকজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোন বালাই নেই। বিগত দিনে এই এলাকায় করোনার কেনো ছোঁয়া না থাকলেও এখন সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার বেশীর ভাগ লোকজন করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়বে।
রাজপরগণা এলাকায় নিরাপত্তা প্রহরী (আনসার সদস্যরা) বলেন, পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার তদারকি নেই। আর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকরা আমাদের কথা শুনেন না। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কঠোরভাবে পদক্ষেপ নিতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ বলেন, করোনা মহামারিতে জনসমাগম এড়াতে রাজবাড়ি এলাকায় সরকারি নিদর্শনা রয়েছে। সেখানে বেড়াতে আসা অধিকাংশ লোকজন শিক্ষিত এবং সচেতন। তারা এই করোনা কালিন সময় কেনো এমন আচারণ করছেন তা আমার বোধগাম্য নয়। সাধারণ লোকজনের মধ্যে সচেতনতা না আসলে তাদের মারা বা জরিমানা আদায় করা এটা সমাধান নয়। আমাদের সকলকেই সুস্থ্য থাকতে হলে বিধি নিষেধ মেনে চলা উচিত।