নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া (রাজশাহী):
পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের বিল দখল করে মাছ চাষ করায় শত শত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। কার্তিকপাড়া উত্তর বিল ও কাশিয়াপুকুর পশ্চিম বিলে মাছ চাষের জন্য লোহার নেট ও সুতি জাল দিয়ে পানি প্রবাহের প্রতিবন্দকতা করায় পানি বন্দি হয়ে পড়ার অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এসব এলাকার মানুষেরা পানি বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবযাপন করছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আতœীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। পানিতে ডুবে গেছে মাঠের ফসলাদি।
সরজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের বদোপাড়া, রাতোয়াল, গোড়াগাছী, সঁরগাছী, মালিপাড়া, কাশিয়াপুকুর, কাজুপাড়া, কার্তিকপাড়া, খলিশাকুড়ি, তেবাড়িয়া, বড়বড়িয়া, মঙ্গলপাড়াসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রামের শত শত ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কার্তিকপাড়া উত্তর বিল ও কাশিয়াপুকুর পশ্চিম বিল অবৈধ ভাবে দখল করে মাছ চাষ করেছে এলাকার প্রভাবশালীরা। বিলের পানি নিস্কাশনের কালর্ভাটটির মুখে লোহার নেট ও সুতি জাল দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। অবৈধ বিল দখলদারেরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তাদের এসব অবৈধ কার্মকান্ডে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে নেমে আসে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও নির্যাতন।
এছাড়াও ভাগলপুর সুইজ গেট, সড়গাছি উত্তরপাড়া, কাশিয়াপুকুর ব্রিজের নিচে সুতি জাল দিয়ে পানি বন্দি করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে করে পানি বিল দিয়ে না নামার করণে ডুবে গেছে এলাকার শত শত ঘরবাড়ি। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষেরা। পানি বন্দি মানুষেরা বিশুদ্ধ পানি, রান্নাবান্না ছাড়াও নানা কষ্টে দিন নিপাত করছে। এ পর্যন্ত সরকারী ও বে-সরকারী কোন ধরনে সাহায্য সহযোগিতা পাইনি পানি বন্দী পরিবার গুলো। জনস্বার্থে বাঁধটি কেটে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে বড়বড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র সরকার বলেন, বিলে মাছ চাষের জন্য এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। গত দুই বছর থেকে এ অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের। পানি বন্দি মানুষেরা নানা ধরনের কষ্টে দিন পার করছে। বিলের পানিতে মাছ চাষের জন্য যে প্রতিবন্দকতা তৈরি করা হয়েছে তা সরিয়ে ফেললে পানি দ্রæত নেমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা আফরোজ বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এক-দুই দিনের মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।