নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় চিহ্নত তিন সুদ ব্যবসায়ির ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব প্রতিবন্ধি বিজয় দাস (১৯) ও তার পরিবার। এদিকে সুদ ব্যবসায়িদের চাপের কারণে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন ভুক্তভোগি। তবে তাদের চক্রান্ত থেকে ছেলেকে মুক্ত রাখতে মা বুলু রাণী দাস বুধবার (১৩ জুলাই) পুলিশে দ্বারস্থ্য হোন। বিজয় দাস উপজেলার ঝলমলিয়া গ্রামের ঋষিপাড়ার নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে।
মা বুলু রাণী দাস বলেন, আমার ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধি। অভাবের সংসারে সময়মত তার সু-চিকিৎসা করাতে পারি না। এ সুযোগে প্রতিবেশী স্বপ্না রাণী দাস গত দুই বছর আগে ছেলের চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা ধার দেন। কিন্তু সে সময় করোনা মহামারির কারণে তার বাবার কাজ বন্ধ থাকে। আর সে হাওলাতের টাকায় ছেলের কিছু চিকিৎসা ও সংসার খরচে ব্যয় করা হয়। কিন্তু স্বাপ্না রাণী টাকা দেওয়ার একমাস পর সেই টাকার সুদ দাবী করেন। আমরা তখন প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা সুদ দিতে থাকি। এদিকে তার সুদ ৯০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও আরো ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। তার এই অর্থ যোগাতে প্রতিবেশী সীতা রাণী ও প্রফুল্ল দাসের নিকট থেকে নেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা। গত কয়েক মাসে ওই দুজনের সুদ দেয়া হয় প্রায় ৪০ হাজার। বর্তমানে তারাও আরো ৩০ হাজার টাকা দাবী করেন।
মা বুলু রাণী দাস আরও বলেন, ক্রমেই ঋণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সম্প্রতি প্রতিবন্ধি ছেলেটা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদিকে সুদ ব্যবসায়িদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে তারা প্রতিনিয়ত আমার ছেলে উপর চাপ দিচ্ছেন। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে ওই তিনজন সুদ ব্যবসায়ির নামে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত স্বপ্না রাণী দাস ও প্রফুল্ল দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, বিজয় দাসকে জিম্মি করে তার পরিবার আমাদের নিকট থেকে টাকা নেয়। এখন সে পুরো টাকা দিচ্ছে না। তাই তাদের কাছে পাওনা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখন আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে তাদের মধ্যে সুদের টাকা নিয়ে জটিলতা আছে। বিষয়টি তারা সামাজিক ভাবে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে সমস্যার সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।