নিজস্ব প্রতিবেদক,পুঠিয়া (রাজশাহী):
সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের তদারকির অভাবে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেশীরভাগ পাড়া-মহল্লায় এখন মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে। বর্তমানে নারী পুরুষে পাশাপাশি অর্থের লোভে কিশোর যুবকরাও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যেই থানা পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় এ উপজেলায় চিহ্নিত ২ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মাদক প্রতিরোধে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় র্যাব সদস্যদের অভিযান চলে। এছাড়া প্রশাসনিক ভাবে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।
সংশ্লিষ্ঠ থানা পুলিশের তথ্যমতে জানা গেছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশী কেনা-বেচা হচ্ছে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, হেরোইন, আইস ও ট্যাপেন্ডটল ট্যালেট।
কয়েক বছরের পূর্বে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক উপজেলা এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি হিটলিস্ট তৈরি করা হয়। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শীর্ষ ও দেড় শতাধিক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি প্রাথমিক তালিকা করা হয়। ওই তালিকায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, এলাকার একাধিক জনপ্রতিনিধির নাম উঠে এসেছে। সেই সাথে নতুন কয়েকজন কিশোর যুবকের নাম রয়েছে।
থানা পুলিশ এদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনকে আটক করেছিল। তবে তারা জামিনে এসে আবারো মাদক ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছে। তবে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা এখনো রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকাবাসীরা বলেন, পাড়া মহল্লার কিছু বখাটে যুবকদের টাকার লোভ দেখায় মাদক ব্যবসায়ীরা। এরপর তাদেরকে ব্যবসায় যুক্ত করছে। আর তারা যুবকদের টার্গেট করে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে মাদকের আড্ডা বসাচ্ছে। আর সেই কাজে সহযোগিতা করছে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।
এছাড়া বহিরাগত শীর্ষ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী উপজেলা সদর এলাকায় আস্তানা গড়ে তুলেছে। তারা পরিবারসহ ভাড়া বাসায় থেকে মাদকের কারবার চালাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কিছু বিভিন্ন এলাকায় র্যাব সদস্যদের অভিযান হয়। মাদকসহ অনেকেই আটক হচ্ছে। অথচ রহস্যজনক কারণে থানা পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আইনগত ভাবে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
এবিষয়ে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উপ-পরিদর্শক (পুঠিয়া সার্কেল) সাইফুল ইসলাম বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের ৫ থানা নিয়ে কাজ করি মাত্র ৬ জন নিয়ে। উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মাদক ছড়িয়ে পড়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, মাদক যে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এটা আমি বলবো না তবে আমরা চেষ্টা করছি মাদককে নিয়ন্ত্রণে রাখার। এছাড়া সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করছেন মাদককে জিরো টলারেন্স নামানোর।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান বলেন, মাদক বিষয়ে কাজ করার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট আছে। আমরা মাদকের কাজ করি অতিরিক্ত হিসেবে যাতে সমাজ নষ্ট না হয়, সেই কারণে আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই। আমরা এর আগেও গাঁজা ও হিরোইনসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি। আর মাদক দেখার জন্য মাদক নিয়ন্ত্রণ অফিস আছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আবারো নতুন করে একটি মাদক ব্যবসায়ীদের লিস্ট তৈরি করা হয়েছে এবং আমরা তাদেরকেও গ্রেপ্তার আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিয়েছি।