নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিলে ফসলি জমিতে অবাধে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। আর খনন করা পুকুরের মাটি বিক্রি হচ্ছে অনুমোদনহীন ইটভাটায়। এলাকাবাসীরা বলছেন, পুকুর খননের সরকারি অনুমোদন নেই। তারপরেও পুকুর খননকারীরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা-পাতি নেতাদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। চুক্তি মোতাবেক দিনে খনন বন্ধ রেখে রাতে লাইট জ্বালিয়ে খননকাজ চলছে। আর খনন করা পুকুরের মাটি বিক্রি হচ্ছে এলাকার অনুমোদনহীন ইটভাটায়। এতে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়ক।
এলাকার জনপ্রতিনিধিদের তথ্যমতে, চলতি মাসের শুরু থেকে উপজেলার শিলমাড়িয়া, জিউপাড়া, ভালুকগাছি ও বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নের ১৩টি স্থানে তিন ফসলি ক্ষেতে এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে খনন হচ্ছে পুকুর। আর একেকটি পুকুর খনন হচ্ছে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ বিঘা জমি নিয়ে।
জিউপাড়া এলাকার চাষি সাইদুর রহমান বলেন, গাইনপাড়ায় গ্রামে একই স্থানে ছয়টি পুকুর খনন হচ্ছে। আর খনন করা মাটি ১২ থেকে ১৪টি ইটভাটার মালিকের ট্রাক্টর বহন করছে। মাত্রাতিরিক্ত মাটি বহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো জরাজীর্ণ হচ্ছে। আমরা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে রহস্যজনক কারণে কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, জমির মালিকেরা উপজেলার প্রভাবশালী এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতি বিঘা জমিতে পুকুর খনন করার জন্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা চুক্তি করেন। আর তিনি বিশেষ সুবিধায় পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেন। এরপর রাতের আঁধারে লাইট জ্বালিয়ে ফসলি জমিতে চলে পুকুর খননকাজ।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুসনা ইয়াসমিন বলেন, একশ্রেণির লোকজন প্রতিদিন এই এলাকায় একরের পর একর ফসলি খেতে পুকুর খনন করছে। পুকুর খনন রোধে বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।
তবে বিশেষ সমঝোতার বিষয়টি অস্বীকার করে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, পুলিশ কারও সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি। প্রতিনিয়ত সড়কে চলাচলকারী অবৈধ মাটিবাহী ট্রাক্টরগুলোকে আটক করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ্ পিএএ বলেন, পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। তবে শুনেছি, পুকুরের মালিকেরা রাতের আঁধারে খনন কাজ করছে। কিন্তু সকালে অভিযানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যেখানে ফসলি জমিতে পুকুর খনন হবে, সেখানেই জেল-জরিমানা দেওয়া হবে।