রংপুরের পীরগঞ্জে সংখ্যালঘুদের গ্রামে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো আবারও নতুন করে তৈরি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদেরও নির্মাণ দেয়া হয়েছে বাড়ি. গরু সহ ঘরের তৈজস পত্র, আসবাব পত্র, পোশাক পরিচ্ছদ সহ পুড়ে যাওয়া সব কিছুই। দেয়া হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নগদ টাকাও। ক্ষতিগ্রস্থ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলছেন, এমন সহযোগিতায় সন্তুষ্ট তারা। আর ত্রাণ ও দুযোর্গ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, এলাকাটিতে সব ভুলে আগের মতো স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিরাজ করছে।
পীরগঞ্জে সংখ্যালঘু মাঝি পাড়া গ্রামের নন্দী রানির অঙ্গার হওয়া আধাপাকা ঘরে নতুন টিন লাগানো প্রায় শেষ। নিখিলের দোকান ঘরও উঠে গেছে। ওদিকে সইবা-সুমতি রানী আর প্রদীপ দাসও পেয়েছেন নতুন ঘর। মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে সরকারিভাবে ক্ষতি গ্রস্থ প্রতিটি বাড়ি তুলে দেয়ার কাজ সম্পন করেছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আসিফ আহসান। তিনি বলেন,সরকারি-বেসরকারি সহায়তা আর পাশে থাকার আশ্বাস সাহস যোগানো হচ্ছে করিমপুর-কসবার মানুষকে। সেই রাতের দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আয়োজন সবখানে। তৈজসপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, শিশুখাদ্য থেকে শুরু করে বই খাতা লুট হওয়া গরু, সব কিছুই পেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। সাথে পেয়েছেন জেলা প্রশাসনের দেয়া ১ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ অনুদানও।
পীরগঞ্জে সংখ্যালঘু ক্ষতিগ্রস্থরা বলছেন, কেটে গেছে আতংক আর ভীতি। হিন্দু-মুসলমান মিলে আগের মত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা।আর স্বল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে দাবি দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।তিনি জানালেন, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাটিতে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা। এ ঘটনায় গ্রামটির ১৫টি পরিবারের ২১টি বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলাকারীরা গরু-ছাগল, অলংকার, নগদ টাকাও নিয়ে গেছেন বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থদের। খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ও পরে র?্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনতে ব্যবহার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় দায়ের করা চারটি মামলায় ৬৬ জন গ্রেফতার হয়েছে।