নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশটি ৪২তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় এ দুটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কোভিডের জরুরি বাজেট সহায়তা হিসেবে এ অর্থ দিচ্ছে।
বর্তমান বিনিময় হার (১ ডলারে ৮৫.৮০ টাকা) অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।
১০ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ সুদসহ এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে চুক্তি হয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদুত ইতো নাওকি বিনিময় নোট চুক্তি করেন।
এরপর ইআরডি সচিব ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইয়ুহো হায়াকাওয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
এর আগে গত বছরের অগাস্টে ৪১তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় জাপান সরকার বাংলাদেশকে রেকর্ড ৩২০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিপুল এ ঋণের অর্থ ‘মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার’ প্রকল্পের জন্য দেওয়া হচ্ছে ১২০ কোটি ডলার। প্রকল্পটির আওতায় গভীর সমুদ্র বন্দরও নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটিতে জাপান প্রায় ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা যোগান দিচ্ছে। সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা।
২০১৪ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি মাত্র ৪৯ শতাংশ।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য একনেক সভায় প্রকল্পটির ব্যয় ১৬ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে সংশোধন করা হতে পারে।
অপরদিকে এ ঋণের অর্থ থেকে ম্যাস এমআরটি ১ (পাতাল রেল) প্রকল্প বাস্তবায়নে দেওয়া হচ্ছে ১১০ কোটি ডলার।
এ প্রকল্পের আওতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর) ও পূর্বাচল রুটে (নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো) পাতাল রেল স্থাপন করা হবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৩১ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা এবং জাইকা ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা যোগান দেবে।
চীনের পাতাল রেলের এই ছবি রয়টার্সের, এমন রেল লাইন হবে ঢাকায়
২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটিতে এ পর্যন্ত উভয় রুটের সব বিস্তারিত সমীক্ষা, জরীপ ও মূল নকশার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বিস্তারিত নকশার কাজ চলমান আছে।
এছাড়া একক এ ঋণ প্যাকেজের আওতায় ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স’ প্রকল্পের আওতায় বাজেট সহায়তা হিসেবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা উত্তরণে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের যোগান দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালের ঐতিহাসিক জাপান সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়। এটি ছিল অংশীদারত্বের সূচনা, যা দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে।“
দেশের চলমান বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে জাপানের সম্পৃক্ততার জন্য দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।