নিউজ ডেস্ক :
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সরকার ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যমূলক ব্যবহার আইন-২০১০’, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩’ এবং ‘পাট আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন করেছে।
আজ বুধবার (২২ মে) দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার পাট চাষী, মিল মালিক, ব্যবসায়ী এবং পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এ আইনগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের নিমিত্ত মাননীয় সংসদ সদস্য/জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান/সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের মেয়র/পৌরসভার মেয়রকে উপদেষ্টা এবং জেলা প্রশাসকদের আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, শেরপুর জেলাসহ চাল উৎপাদন প্রবণ ১৮টি জেলার চালকলসমূহে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য বিশেষ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
উল্লেখিত আইন বাস্তবায়নে জেলা চেম্বার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, চালকল মালিক সমিতি, চালকল মালিক এবং ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনিসহ মোট ১৯টি পণ্যের উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারীদের সহযোগিতা কামনা করছি। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলবো এ আইন বাস্তবায়নে আপনারা ধীরে ধীরে কঠোর হন।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে পাটের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং পরিবেশ বান্ধব পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অনুশাসন প্রদান করেছেন। তিনি পাটের উৎপাদন ও বহুমুখী পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির করতে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
পাট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশে বছরে প্রায় ৮০-৮৫ লক্ষ বেল পাট উৎপাদিত হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে কাঁচা পাট হিসেবে কম/বেশী ১০ লক্ষ বেল এবং পাটজাত পণ্য হিসেবে কম/বেশী প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন বিদেশে রপ্তানি করে বছরে প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি যা আমার বিবেচনায় অপ্রতুল।’ পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করে আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
মতবিনিময়সভায় পাট চাষী, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অংশীজনরা বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন।
দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে সরকারি কর্মকর্তা ও পাট চাষীরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রীর কাছে পাট ও পাট বীজের দাম ও অন্যান্য বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসন, দিনাজপুর এর সহায়তায় পাট অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম, দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জাকারিয়া জাকা, নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরাসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধি, অটো রাইস মিল ব্যবসায়ী, পোল্টি ফিড ব্যবসায়ী, বস্তা ব্যবসায়ী, জুট মিল মালিক প্রতিনিধি, চালকল মালিক প্রতিনিধি এবং পাট চাষিবৃন্দ।