মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, ‘পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করার জন্য বিভিন্ন তরফ থেকে সুপারিশ ও আলোচনা ছিল। আজ (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে এটাকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। পাশাপাশি সে অনুযায়ী কৃষির সব সুযোগ-সুবিধা পাট খাত পাবে।’
পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। সে সুবাদে কৃষির সব সুযোগ-সুবিধা পাট খাত পাবে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পাটজাত পণ্য ও পাটের আঁশের ব্যবহার অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি এখানে অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এখন থেকে পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। এতোদিন এটা কৃষিপণ্য ছিল না।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, ‘এতোদিন পাটকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করার জন্য বিভিন্ন তরফ থেকে সুপারিশ ও আলোচনা ছিল। আজ (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে এটাকে কৃষিজাত পণ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। পাশাপাশি সে অনুযায়ী কৃষির সব সুযোগ-সুবিধা পাট খাত পাবে।’
তিনি বলেন, ‘পাট উৎপাদনের যে প্রক্রিয়া ছিল, অনেক ক্ষেত্রে শিল্পজাত পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পাট উৎপাদনে উৎসাহ যাতে বেশি দেয়া যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হলে পাটের আবাদে কৃষকরা কৃষি খাতের মতো ঋণ পাবেন। একইসঙ্গে তারা রপ্তানি খাতের সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে এটি বাস্তবায়নের জন্য বলেছেন।’
জাতীয় কৃষি বিপণন নীতি-২০২২ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন
সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় কৃষি বিপণন নীতি-২০২২ এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এই নীতিমালায় মূলত বাংলাদেশের কৃষির উৎপাদন ও প্রচলিত বাজার ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। কীভাবে কৃষির বিপণনকে বাজারমুখী করা যায় এবং উৎপাদনকারীকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেয়া যায় সে বিষয়গুলো এখানে আনা হয়েছে।’
কৃষি বিপণন নীতিমালার সুবিধা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কৃষি ব্যবসায় বাজার সংযোগ বৃদ্ধি করা হবে। কৃষিপণ্য বিপণনে সহায়ক বাজার তথ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও শক্তিশালী করা হবে। একইসঙ্গে কমিউনিটিভিত্তিক, চুক্তিভিত্তিক ও গ্রুপভিত্তিক বিপণন জোরদার করা হবে।
‘কৃষি উপকরণ বিপণনকে সহজীকরণ ও আধুনিকায়ন, কৃষিপণ্যের গুদাম ও সংরক্ষণাগার ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন এবং কৃষি বিপণন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে যুব উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব হ্রাসে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ই-এগ্রিকালচার মার্কেটিংয়ে সহায়তা দেয়া হবে। কৃষি ব্যবস্থার মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নেরও সুযোগ তৈরি করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া কৃষি বাজার ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করে ডিজিটাল মার্কেট করা হবে। উন্নত গবেষণাগার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় করার জন্য সরবরাহ ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা হবে। নিরাপদ কৃষি পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করা, কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থায় সহায়তা করা হবে।
‘কৃষি পরিবহন সাপ্লাই চেইনের উন্নয়ন করা হবে। প্রক্রিয়াজাতকরণ কৃষি পণ্যের বিপণন সম্প্রসারণ করা হবে। কৃষিভিত্তিক ব্যবস্থা ও শিল্প উন্নয়নে সহায়তা করা হবে। কৃষি উন্নয়নে বিপণন ও গবেষণাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কৃষি বিপণনে দক্ষ জনবল গঠন করা হবে। কৃষি পণ্যের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এরকম মোট ১৯টি বিষয়ে নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’