নিজস্ব প্রতিবেদক:
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি, এই প্রবাদ প্রচলিত। এটার সাথে বাস্তবতার মিল সবসময়। নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৫ নং চামারী ইউনিয়নের মহিষমারী গ্রামে দরিদ্র পরিবারে জন্ম সালমা আক্তার। বাবা সানোয়ার হোসেন মা ময়জান বেগমের একমাত্র কন্যা সালমা। সালমা এসএসসি পাশ করেন বিলদহর কারিগরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং এইচএসসি পাশ করেন টেকনিক্যাল বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজ। বর্তমানে সে উদ্দোক্তার পাশাপাশি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কিশোর কিশোরী প্রকল্পের আবৃতি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
সফলতার গল্প: সালমার বর্তমান ২০ হাজার মাসিক আয়। মাসে প্রায় ২০/২৫ মন ভার্মি কম্পোস্ট জৈব সার উৎপাদন করেন এবং ১৬/১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। নাটোর জেলা বাদেও বাইরেও এই জৈব সার বিক্রি করেন। তার দেখে রেনুকা, হাজেরা, সালমা, বিউটি, বুলবুলি, মাসুমা, শাহিনুর সহ ৮/১০ জন এ কাজে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সালমা ২০১৭ সালে মহিলা বিষয়ক অফিস থেকে দর্জী প্রশিক্ষণ এবং বিউটিফিকেশন ট্রেনিং করেন। তারপর থেকে দর্জীর কাজ শুরু করেন। এরপর থেকে ব্যাগ তৈরির কাজ শুরু করেন। প্রতিদিন তার উদ্যোগে ৭/৮ জন নারী ব্যাগ তৈরির কাজ করছে। প্রতিদিন ২/৩ শ ব্যাগ তৈরি করা হচ্ছে। এই ব্যাগ গুলো নাটোর সহ সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সালমা বলেন, ২০২০ সালে করোনাকালিন সময়ে অনলাইন বিজনেস শুরুর চিন্তা করি। এসময় ইউটুইব থেকে দেখে জৈব সার তৈরির কাজে উৎসাহ পান। তারপর কৃষি অফিস থেকে দুদিনের ট্রেনিং করে কম্পোস্ট সার তৈরি শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, কম্পোস্ট সার তৈরির কাজে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা স্যারের সহযোগিতা পেয়েছি। তার অনুপ্রেরণায় এ কাজে উৎসাহ পেয়েছি। এখন আমার ৬০ টি কম্পোস্ট সার তৈরির হাড়ি বা চাড়ি রয়েছে। আমি নিজেকে একজন সফল নারী এবং উদ্দোক্তা মনে করি।
চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান স্বপন মোল্লা বলেন, সালমা একজন নারী উদ্দোক্তা। তার কাজে অন্যদের ও অনুপ্রেরণা যোগাবে। নারীরা এভাবেই পরিবার ও সমাজ উন্ময়নে এগিয়ে যাচ্ছে। চামারী ইউনিয়নের নারী উদ্দোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা আমরা করতে প্রস্তুত। তিনি নারী উদ্দোক্তাদের অনুদান সহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতা এবং সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, সালমা একজন সফল উদ্দোক্তা। সে কম্পোস্ট সার তৈরি করে আসছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।