পবিত্র ঈদুল আজহা আজ। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। ত্যাগের
মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ
মুসলিমরা পশু কোরবানি করবেন।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অসামান্য ত্যাগের কথা
স্মরণ করে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা হিজরি সনের ১০ জিলহজ ঈদুল আজহা উদযাপন করে।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নযোগে আল্লাহর নির্দেশ পেয়েছিলেন তিনি যেন তার
সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানি করেন। ছোট ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.) ছিলেন নবীর
সবচেয়ে প্রিয়। তাকে কোরবানি করতে প্রস্তুতি নিলে শেষ মুহূর্তে পরম করুণাময়
আল্লাহ তার পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি কবুল করেন।
আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এই দিনে যার যার সাধ্যমতো পশু
কোরবানি করা ইসলামের বিধান। মুসলিমরা এদিন ঈদের জামাতে দুই রাকাত ওয়াজিব
নামাজ আদায়ের পর পশু কোরবানি দেন। পরের দুই দিন অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১১ ও ১২
তারিখেও পশু কোরবানি দেয়া যায়। রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে
জাতীয ঈদগাহ ময়দানে। হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে
ঈদের প্রধান জামাত। এখানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার
সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নামাজ আদায় করবেন।
তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল সাড়ে আটটায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এবার ৫টি ঈদ জামাত
অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এর পর আরও ৪টি জামাত হবে
যথাক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা ও পৌনে ১১টায়।
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এবার রাজধানীতে ৪০৯টি
ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিটিতেই প্রতিটি ওয়ার্ডের মসজিদ, মাঠ ও ঈদগাহে ৪
বা ৫টি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৪টি করে এবং জাতীয়
ঈদগাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠসহ মোট ২৩০টি স্থানে ঈদ জামাতের আয়োজন করা
হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডের মোট ১৭৯টি ঈদ জামাতের
আয়োজন করা হয়েছে।
এবার রাজধানীসহ দেশের ১১ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের কোরবানির পশু জবাইয়ের
জন্য ২ হাজার ৯৩৬টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর উত্তর
সিটি করপোরেশনে ৫৪৯ ও দক্ষিণে ৬২০টি স্থান রয়েছে। সেখানে প্যান্ডেলসহ আরও
নানা সুবিধার বন্দোবস্ত থাকবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত
অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত
রাজনীতিবিদ, বিচারক, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী
এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের জনগণ এবং পেশাজীবীদের সঙ্গে
ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গণভবনে সকাল ১০টা থেকে বেলা
১১টা পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মী, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক,
বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের জনগণ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
করবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী একই স্থানে বেলা ১১টায় বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন
বাহিনীর প্রধানগণ, বিদেশি কূটনীতিক, জ্যেষ্ঠ সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার
বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের বিনোদন দিতে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে রাজধানী ও আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো।