নিউজ ডেস্ক: ছাত্রদলের দুই শীর্ষ পদে নেতা নির্বাচন নিয়ে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনটির কর্তৃত্ব বাগিয়ে নিতে একদিকে বিশেষ দুটি সিন্ডিকেটের বাধার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে অন্যদিকে শর্ত লঙ্ঘন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিচ্ছেন বিবাহিতরাও। যার কারণে ছাত্রদলের কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে সফল করা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এমন প্রেক্ষাপটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলছেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিবাহিতরাও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। কিন্তু প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে স্পষ্টভাবে বলা আছে, অবিবাহিত হতে হবে, এসএসসি ২০০০ সালের মধ্যে হতে হবে, বর্তমানে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই ভর্তি থাকতে হবে। কিন্তু ফরম জমা দেয়াদের বড় একটি অংশই বিবাহিত এবং তাদের সন্তানও আছে। অনেকে বিষয়টি অস্বীকার করছেন। কেউ বলছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু তালাক হয়ে গেছে। বিএনপি ও ছাত্রদলের একাধিক নেতা বলেন, বিবাহিতদের প্রার্থিতা বাতিল করা বা না করা নিয়ে আবারও সংকট দেখা দিতে পারে।
এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শঙ্কা প্রকাশ করে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট বলেন, কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা নিজেরাও জানেন কে বিবাহিত, কে অবিবাহিত। জানার পরও বিবাহিতদের কাছে ফরম বিক্রি করেছেন, জমাও নিয়েছেন তারা। বিষয়টি দুঃখজনক। এতে নতুন করে সংকট দেখা দিতে পারে। তবে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে দলের অভ্যন্তরে যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে তা আরও গভীর সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আবু তাহের বলেন, বিয়ে করার কারণে প্রার্থিতা বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হতে পারেন। আবার কেউ বিয়ে করেছেন কিন্তু তথ্য-প্রমাণের অভাবে প্রার্থিতা বাতিল হলো না- এ ক্ষেত্রেও অন্যরা প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন। পরিস্থিতি সেদিকেই গড়াচ্ছে। বস্তুত কোনো সমাধান আসছে না।
তিনি আরো বলেন, যদি মনোনয়ন পত্র বিতরণের আগে এগুলো বিষয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল নেতারা সচেতন থাকতেন তবে সংকট এড়ানো যেত। এখানেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন।
একই ধরণের মতামত ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি আমানুর রহমান। তিনি বলেন, যদি যাচাই-বাছাই করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয় তাহলে কোনো সংকট থাকার কথা নয়। কিন্তু এর ব্যত্যয় ঘটলে সংকট সৃষ্টি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
প্রসঙ্গত, নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে অবশেষে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তফসিল অনুযায়ী, ২০ আগস্ট শেষ দিনে নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ৭৬ নেতা। যাদের মধ্যে অধিকাংশই বিবাহিত বলে জানা গেছে।